বান্দরবানে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে এক শিক্ষককে চাকরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তিন লক্ষ টাকা আত্মসাতের চাঁদাবাজির মামলায় ভূয়া সাংবাদিক রতন দে শাওন (৩৩) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বুধবার রাতে শহরের মেম্বারপাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রতারণা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কারনে জেলার আরো বেশ কয়েকজন ভূয়া সাংবাদিক নজরদারীতে আছেন, তাদের যে কোন সময় গ্রেফতার করা হতে পারে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মাইটিভি’র প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এবং পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা’র নাম ভাঙ্গিয়ে লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহেদুল ইসলামে সহকারী শিক্ষকের চাকরী দেয়ার প্রলোভন দেখায় রতন, এক পর্যায়ে ৩ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় রতন। আর এনিয়ে বেশ কয়েকবার অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেও টাকা ফেরত না পেয়ে প্রতারণার শিকার শাহেদুল ইসলাম সদর থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা করে। উক্ত মামলায় পুলিশ ভূয়া সাংবাদিক রতন’কে তার নিজবাসা থেকে গ্রেফতার করে। রতনের বিরুদ্ধে বান্দরবান সদর থানায় চাঁদাবাজি, নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদকদ্রব্য আইন, আওয়ামীলীগের মিছিলে হামলা’সহ একাধিক মামলা রয়েছে।
অভিযোগকারী শাহেদুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে রতনের ছবি দেখিয়ে এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে সহকারী শিক্ষকের চাকরী দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। তিনি আরো বলেন, মাইটিভি’র প্রতিনিধি পরিচয়ে আমার কাছ থেকে নগদ এবং বিকাশ একাউন্টে টাকাগুলো গ্রহণ করেছে, চাকরী না হওয়ায় টাকাগুলো চাইলে সে কয়েকদফায় দেয়ার কথা বলেও দেয়নি।
মাইটিভি চট্টগ্রাম অফিসের রিপোর্টার মোহাম্মদ বাবুল বলেন, বান্দরবান জেলায় মাইটিভি’র কোনো প্রতিনিধি নেই, কেউ মাইটিভি’র পরিচয় দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।
মাইটিভি’র সাংবাদিক পরিচয়ে রতন দে শাওন জেলা শহরের কালাঘাটায় পাহাড় কাটা ঘটনায় এবং বিভিন্ন অজুহাতে বিভিন্ন জনকে পুলিশ’কে ধরিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে। শহরের নার্সিং ইনিষ্টিটিউট কলেজ ভবনের নির্মাণ কাজের ঠিকাদারের কাছ থেকেও চাঁদা দাবী করেছে, এমন তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে।
বান্দরবান সদর থানার ইনচার্জ কৃষ্ণ কুমার দাশ জানান, মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে শিক্ষককে চাকরী দেয়ার কথা বলে চাঁদা আদায় করায় চাঁদাবাজির মামলায় রতন’কে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, নারী ও শিশু নির্যাতন’সহ সদর থানায় আরো একাধিক মামলা রয়েছে।
সম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকা ও ভূয়া অনলাইনের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কাগজপত্র বিহীন মোটরসাইকেলে প্রেস লিখে বান্দরবানে ব্যাপক চাঁদাবাজিতে নেমেছে বেশ কয়েকজন স্বল্প শিক্ষিত তরুণ। আর তাদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে জেলার নিরাপত্তা বাহিনীসহ জেলার সিনিয়র সাংবাদিকদের অভিযোগ প্রদান করে অনেক ভুক্তভোগী। এসব একাধিক ঘটনার কারনে জেলার একটি গোয়েন্দা সংস্থা এসব কতিথ সাংবাদিকদের বিশেষ নজরে রেখেছে, এমন তথ্য পাওয়া গেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্রে। আরো জানা যায়,যথাযথ তথ্য প্রমান পাওয়া গেলে কতিথ এই সাংবাদিকদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি বলেন, চাকরী দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়াটা অন্যায়, যারা এ ধরণের অপরাধের সাথে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।