দ্বিতীয় ধাপে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার ৭ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলের ৫ বিদ্রোহী প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন
এদিকে আওয়ামী লীগের মুখোমুখি অবস্থানে আওয়ামী লীগ। বিএনপি না থাকায় আগামী ১১ নভেম্বর আসন্ন দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে তৃণমূলে ক্ষমতাসীন দলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়েছে নিজ দলের নেতাকর্মীরাই। দলীয় কোন্দল ছড়িয়ে পড়েছে তৃণমূল পর্যন্ত। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা একে অন্যের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন।
এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে মারামারি সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দল থেকে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দিয়েও তৃণমূলে বিদ্রোহ থামাতে পারছে না ক্ষমতাসীনরা। নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে নেমে শক্ত অবস্থানে আছে সব বিদ্রোহীরা। জয়ের ব্যাপারেও শতভাগ আশাবাদী এসব প্রার্থীদের।
এদিকে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়ছে আওয়ামী লীগ। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ্যে প্রচারনা চালানোর দায়ে ইতিমধ্যে একাধিক নেতাকর্মী কে বহিষ্কার করা হয়। একইসাথে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হবার দরুন জেলা যুবলীগ কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদানের জন্য বলা হয়। ইতিমধ্যে বহিষ্কার আদেশ কে কেন্দ্র করে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ ক্ষোভ বিরাজ করছে। ফলে দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নেমেছে আওয়ামী লীগ। নিজেরা দীর্ঘ সময়ে ধরে দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়েও দল অযোগ্য ব্যাক্তিদের বিশেষ উপায়ে স্থানীয় নির্বাচনে মনোনয়ন দেয় বলে দাবী করেছেন বহিষ্কার আদেশ প্রাপ্ত সহ অনেক নেতারা।
গত (২৭ অক্টোবর) বুধবার প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর থেকেই চেয়ারম্যান পদে ১৭ জন,সংরক্ষিত আসনে ৫৫ জন ও সাধারণ আসনে ২০০ জন নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। অত্র নির্বাচনে সাত ইউনিয়নের মধ্যে,মাটিরাঙ্গা ৭ হাজার ৮০১,বেলছড়ি ৯ হাজার ৪০৬,গোমতি ৯ হাজার ৩৩৯,আমতলি ইউনিয়নে ৫ হাজার ৯২৫, বড়নাল ৭ হাজার ৩১২,তবলছড়ি ইউনিয়নে ১৩ হাজার ৪৯৮ তাইন্দং ইউনিয়নে ৯ হাজার ৯৮২ এবং জন ভোটার সহ সর্বমোট ৬৩ হাজার ২৬৩ জন ভোটার রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে তাইন্দং ইউনিয়নে মোঃ পেয়ার আহম্মদ মজুমদার, তবলছড়িতে নুর মোহাম্মদ, বড়নালে মোঃ ইউনুস মিয়া,আমতলিতে মোঃ আবদুল গণি, গোমতিতে মোঃ তফাজ্জল হোসেন, বেলছড়িতে মোঃ রহমত উল্লাহ, মাটিরাঙ্গায় হেমেন্দ্র ত্রিপুরা নির্বাচন করছেন।
অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাইন্দং ইউনিয়নে মোঃ হুমায়ুন কবির, বড়নালে মোঃ ইলিয়াস, আমতলীতে মোঃ জমির আলী,গোমতিতে মোঃ ফারুক হোসেন, বেলছড়িতে মোঃ মামুন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তবলছড়িতে মোঃ আবুল কাশেম ভুঁইয়া,মাটিরাঙ্গায় ত্রিপনজয় ত্রিপুরা, বড়নালে মজল হক,তাইন্দং মো.তনু মিঞা এবং মো.সিরাজুল হক
বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ জমির আলী আওয়ামী লীগ যোগ্য প্রার্থীকে নৌকা প্রতীক দেয়নি মন্তব্য করে বলেন, আমরা দলের জন্য,দলের দুঃসময়ে অনেক ত্যাগ করেও নৌকার মনোনয়ন পাই নি। কিন্তু দলে অনুপ্রবেশকারীরা নৌকা প্রতীক পেয়েছে। জনগন আমাদের পাশে আছে বলেই আমরা নৌকার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধ্য হয়েছি।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সুবাস চাকমা বলেন, ইতোমধ্যে, আমতলীর বিদ্রোহী প্রার্থীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সাথে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পক্ষ্যে প্রচারনা চালিয়ে যাওয়ায় তবলছড়ি ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মো.জামাল উদ্দিন এবং যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ডাঃ মো.ইসমাইল হোসেন তাইন্দং ইউনিয়ন শাখার যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মো.সুরুজ মিয়া,সম্মানিত সদস্য মুজিবুল হক সরকার কে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। দলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সংগঠনের নিয়মানুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
এছাড়াও,গোমতি,তাইন্দং,বড়নাল,বেলছড়ি ইউনিয়নের চার বিদ্রোহী প্রার্থীকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ খাগড়াছড়ি জেলা শাখা থেকে দলীয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন এবং তবলছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দলের সাথে কোনো সংযুক্ত না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।