মেয়েকে হত্যা, আসামীরা প্রকাশ্যেঃ কোথায় যাবেন নাইক্ষ্যংছড়ির বৃদ্ধ আমির

NewsDetails_01

মেয়ে হত্যার কথা বলতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নাইক্ষ্যংছড়ির বৃদ্ধ আমির হোসেন
মেয়ে হত্যার কথা বলতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন নাইক্ষ্যংছড়ির বৃদ্ধ আমির হোসেন
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে যৌতুকলোভী স্বামীর বলি হলেন ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আমেনা। চাহিদামত যৌতুক না পাওয়ায় স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে স্বামী আরিফ উল্লাহ। দীর্ঘদিন ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে রাখা হলেও সম্প্রতি আদালতে মামলা দায়ের করার পর বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। আর মেয়ে হত্যার বিচারের জন্য নিঃস্ব পিতা আমির ঘুরছেন প্রশাসনসহ বিভিন্নজনের দূয়ারে দূয়ারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,গত ১৮ আগষ্ট মেয়ের বাবা বাদী হয়ে বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যালে এ মামলা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় নতুন করে চলছে নানা গুঞ্জন। অভিযুক্ত পক্ষ ঘটনাটি সমঝোতা করার প্রস্তাবে ব্যর্থ হয়ে বর্তমানে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন আমিনার পরিবার।
তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী আশারতলী জারুলিয়াছড়ি গ্রামের আমির হোসেনের মেয়ে আমিনা খাতুন ও একই এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে আরিফ উল্লাহর চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা উভয় সুখে শান্তিতে ঘর সংসার করলেও শাশুড়ী আজু মেহের তাদের সুখ সহ্য করতে পারেনি। শাশুড়ির প্ররোচনায় সংসার চালাতে যৌতুকের টাকার জন্য আমিনা খাতুনকে তার পিতার বাড়িতে পাঠাতো স্বামী আরিফ উল্লাহ। কিন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় এক মাস পিতার বাড়িতেই অবস্থান করে আমিনা। এরই মধ্যে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল আমিনা। পরে অবস্থা বুঝতে পেরে গত ৬ জুন আমিনাকে তার পিতার বাড়ি থেকে নিয়ে যায় স্বামী আরিফ উল্লাহ। এর পর থেকে আমিনার পরিবারের সাথে আরিফ উল্লাহ মোবাইল ফোনসহ সবধরনের যোগযোগ বন্ধ রাখে।
আমিনার বাবা আমির হোসেন বলেন,মেয়েকে হারিয়েছি, এখন প্রকাশ্যে থাকা মামলার আসামীরা যাতে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয় সেই দাবী জানাচ্ছি আমি।
সর্বশেষ গত ১১ জুলাই স্থানীয় হামিদা বেগম, নুর আংকিস নামে দুই স্কুল ছাত্রী বাড়ির পাশ্ববর্তী পাহাড়ী ঝিরিতে বোরকা, ব্যাগ, কাপড় চোপড় দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেয়। আমিনার পরিবার তার মেয়ের ব্যবহৃত জিনিসপত্রের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে গত ২৯ জুলাই নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় গেলে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে উদ্ধারকৃত আলামত থানায় রেখে দেয় এবং বিষয়টি তদন্ত করবে বলে আমিনার বাবাকে আশ্বাস দেন। কিন্তু এর পর পুলিশ নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে আসলে আমিনার বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে গত ১৮ আগস্ট বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুন্যালে সংশ্লিষ্ট আইনের ২০০০ এর ১১ (ক)/৩০ প্যানেল কোড ৩৬৪ ধারায় মামলা রুজু করেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদুল কবির জানান, কোর্টে মামলা হলেও বিষয়টি তদন্তাধিন রয়েছে, তারা এ ঘটনার রহস্য বের করতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন।

আরও পড়ুন