ঐতিহ্যবাহী ১৪০তম রাজ পূণ্যাহ মেলাকে ঘিরে পর্যটকরা এখন বান্দরবানমুখী। দেশি-বিদেশি পর্যটকের পদভারে মুখর হয়ে উঠছে বান্দরবান। ইতিমধ্যে অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে শহরের হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউসের কক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী রাজমেলা দেখতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ সারা দেশ থেকে প্রতিবছরই এই মৌসুমে লোকজন ছুটে আসছে। এর ব্যাতিক্রম হচ্ছেনা এবারও। গত বছর প্রায় এক লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটেছে বান্দরবানে। আর এবার কাল ২১ ডিসেম্বর থেকে ২৩ ডিসেম্বর তিন দিনব্যাপি বোমাং রাজপুণ্যাহ উপলক্ষ্যে প্রায় দেড় লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন হোটেল মালিকরা। বিপুল সংখ্যক মানুষের নিরাপত্তায় পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, রাজপূণ্যাহ’য় মোতায়েন করা হচ্ছে ৪শ’র অধিক পুলিশ,বসানো হয়েছে ক্লোজসার্কিট ক্যামরা।
বান্দরবান হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ-সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, খাজনা আদায়ের উৎসব আর বছরের শেষ দিনকে কেন্দ্র করে শহরের ৫৫টি হোটেল মোটেলের সব রুম বুকিং হয়ে গেছে। এসব হোটেলে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে ।
এদিকে হোটেল ব্যবস্থাপকরা জানান, হোটেল হিলভিউ, হিলটন, হোটেল প্লাজা, হিল কুইন, ভেনাস রিসোর্ট, পাহাড়িকা, ফোর ষ্টারসহ হোটেল মোটেল এরই মধ্যে বুকিং হয়ে গেছে, আর নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে ছোট-বড় সব হোটেল-মোটেল ।
বান্দরবানের মিলনছড়ি রিসোর্ট এর ম্যানেজার রয়েল বম বলেন,আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের সব রুম অনেক আগেই বুকিং হয়ে গেছে, মেলা ও শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে।
পর্যটন কেন্দ্র নীলাচল, নীলগিরি, মেঘলা, প্রান্তিকলেক, শৈলপ্রপাতে প্রতিদিনই আসছেন হাজারো পর্যটক। পাহাড়ের সৌন্দর্য্য আর বোমাং রাজ মেলা দেখতে এরই মধ্যে অনেকে ঘুরতে এসেছেন বান্দরবানে ।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো: নুরুল আলম জানান, বান্দরবানের বোমাং রাজ মেলা সম্পর্কে আমার বন্ধুদের থেকে শুনেছি। রাজাদের ইতিহাস আর ঐতিহ্য দেখার জন্য আগে থেকে চলে এসেছি বান্দরবানে।
রাজপূণ্যাহ মেলাকে ঘিরে জেলার ১১টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য মন্ডিত মনোজ্ঞ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এ সময় পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মিলন মেলা পরিণত হয়, দেশি- বিদেশী পর্যটকরা ভীর জমায় এ পর্যটন শহরে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রবীণ নেতা হিসাবে রাজার আর্শিবাদ পাওয়ার জন্য দূর্গম পাহাড়ী এলাকা থেকে পাহাড়ীরা রাজ দরবারে এসে ভীর জমান।
কুমিল্লা থেকে স্ব-পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা আরেক পর্যটক আবছার বলেন, পাহাড় ঘেরা বান্দরবান দেখতে অনেক সুন্দর । পাহাড়ি ঝর্ণা আর সাঙ্গু নদী সৌন্দর্য্য আমাকে বিমোহিত করেছে অনেক বেশি ।
পর্যটন ব্যবসায়িদের সূত্রে জানা গেছে, দেশের অন্য প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকদের কাছে বান্দরবানে পাহাড়ি খাবারের চাহিদা থাকে একটু বেশি। তাই পর্যটকদের জন্য ভিন্ন ধাঁচের খাবারের আয়োজন করছে পর্যটন ব্যবসায়িরা। অনেকে এরই মধ্যে খাবারের অগ্রিম বুকিং দিয়ে রেখেছে ।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান,পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আর পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।