রুমায় এলজিইডি‘র রাস্তা নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইটের খোয়া !
অভিযোগ ঠিকাদার রতন কান্তি দাশ এর বিরুদ্ধে
বান্দরবানের রুমা উপজেলার বটতলীপাড়া-গালেঙ্গ্যা যাওয়া রাস্তার কাজে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজইডি) বাস্তবায়নে প্রায় ১২কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণ কাজে ইটের খোয়া দেড় ইঞ্চির কথা বলা হলেও এতে ব্যবহার হয়েছে-তিন থেকে চার ইঞ্চি বড় ইটের টুকরা। এসব বড় আকারের ইটের খোয়া মিলিয়ে রাস্তার কাজ ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত মেকাদম হয়ে গেছে। বড় খোয়া দিয়ে মেকদমের কারণে কার্পেটিংয়ের সময় বড় খোয়া-বিটুমিন মেশাতে বিঘ্নিত হয়ে ফাঁক হতে পারে। এতে কার্পেটিং ওঠে যাবার আশঙ্কা থেকে গেছে। ফলে রাস্তার কাজ টেকসই হবেনা বলে মনে করছে স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ১১ কোটি ৮৬লক্ষ টাকার ব্যয়ে গত বছরের আগস্ট মাসে রুমার-বটতলীপাড়া রাস্তা থেকে গালেঙ্গ্যা অফিস পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং করণের কাজ শুরু করেন ঠিকাদার রতন কান্তি দাশ।
আরো জানা গেছে, ময়ুর পাড়ার পাশে কোলাদাইং ঝিরি আগা থেকে রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে বটতলী পাড়ার পার্শ্ববতী খক্ষ্যংঝিরি কাছাকাছি পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার মেকাদমের কাজ চলছে। রাস্তায় খন্ড খন্ড অংশে মেকাদমে আকারে বড় খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে নির্মাণ কাজে নিয়োজিত গাড়ি চলাচলেই এরমধ্যে নিম্নমানের খোয়াগুলো গুড়িয়ে বালু-মাটিতে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া নির্মাণ কাজে সাইটের এ্যাজিং মেকাদম থেকে পরিস্কার করবার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এ অবস্থায় রাস্তার কার্পেটিং ধরে রাখতে না পেরে ওঠে যাবার যথেষ্ট সম্ভাবনা থেকে গেছে।
এই ব্যাপারে নির্মান শ্রমিক দেলোয়ার (৩৮)বেশ কয়েক ট্র্যাক নরম ইট আনার কথা জানিয়ে বলেন, ওইগুলো শুরুতে দেয়া হয়ে গেছে, এখনতো, এখানে একটু-ওখানে একটু খারাপ খোয়া। এসময় পাশে থাকা আরেক শ্রমিক দেলোয়ারকে দমকিয়ে বলেন, খারাপ খোয়া সব তলে গেছে। বড় খোয়াগুলো রাস্তায় দিলে মজবুত হবে কিনা তা জানতে চাইলে শ্রমিকেরা বলেন, কন্টাক্টর-ইঞ্জিনিয়ার জানে।
এদিকে ময়ুর পাড়ার লোকজন জানায়, রাস্তার কাজটি তাদের পাড়ার পাশ থেকেই শুরু। তাই কী পরিমাণ বড় ইটের টুকরো দিয়েছে তা সব তাদের চোখে দেখা। এসব খারাপ কাজের কথা ওঠাইলে ক্ষেপে যায় ঠিকাদারের লোকজন, জানালেন পাড়া প্রধান কারবারী ক্যশেঅং মারমা।
তিনি বলেন, তার জায়গা থেকে পাহাড় কেটে বালু নিলেও এখনো সব টাকা পরিশোধ করেনি ঠিকাদারের লোকজন। এসময় স্থানীয় মাখ্যাই চিং(৩৭) জানান, রাস্তায় একটি ইটকে মাত্র তিন ভাগ ভেঙ্গে ছোটগুলোর সাথে দিতে দেখেছেন।
এই বিষয়ে ঠিকাদার রতন কান্তি দাশ বলেন, খোয়া আকারে বড়, খোয়াগুলো আবার ভাঙ্গিয়ে দিতে বলেছি, নাদিলে খোয়া ভাংছে তাদের কোনো মজুরি টাকা দিবোনা।
নিম্নমানের প্রায় ২ লক্ষ ইট বাইরে থেকে এনে খোয়া ভাঙ্গে রাস্তার তলে দিয়ে ফেলেছেন এ কথা জানতে চাইলে ঠিকাদার রতন কান্তি দাশ আরো বলেন, কিছু ইট নরম আছে, এগুলো জেলার ইঞ্জিনিয়ার কথানুযায়ী রাস্তার এক স্থানে নাদিয়ে বিভিন্ন অংশে দিয়েছি।
এই বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ তোফায়েল আহমদ বলেন, সরেজমিনে গিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে, আকারে বড় ও নিম্নমানের ইটের খোয়াগুলো তলে দিয়ে রোলিং করা মেকাদমের বিষয়ে করার কিছুই নেই।