লামায় জিম্মায় থাকা ২৭ হাজার ঘনফুট পাথর উধাও !

NewsDetails_01

লামায় উধাও হওয়া পাথরের স্টক
বান্দরবানের লামা উপজেলায় নিলামের আগেই জব্দকৃত ২৭ হাজার ঘনফুট পাথর উধাও হয়ে গেছে। স্থানীয়রা শনিবার স্টকে কোন পাথর না দেখে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দুর্বলতা ও উদাসীনতাকেই দায়ী করা করছেন সচেতন মহল।
জানা গেছে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারী উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বনপুর এলাকার ৩টি স্তুপে অবৈধভাবে উত্তোলন ও মজুদকৃত ২৭ হাজার ঘনফুট পাথর আটক করে ডিশডেবা বিজিবি’র সদস্যরা। পরে উপজেলা প্রশাসনকে পাথর আটকের বিষয়টি জানালে নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সায়েদ ইকবাল ঘটনাস্থলে গিয়ে পাথরগুলো জব্দ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আপ্রুচিং মার্মার জিম্মায় দেন। পরবর্তীতে পাথর আটকের ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক বান্দরবান জেলা প্রশাসনের কাছে মতামত চাইলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসক। এ প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রাশাসনের নির্দেশে লামা থানা পুলিশ মালিক বিহীন পাথরগুলো নিলামের অনুমতি চেয়ে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করে। আদালত এখনো কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি। এরই মধ্যে গত ৫দিনে জব্দকৃত স্টকের পাথরগুলো উধাও হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে ২০১৮ইং স্থানীয় আলী হোসেন মিজান, প্রদীপ কান্তি দাশ ও মো. নাছির উদ্দিনের নামে এক মাসের মেয়াদে ৪০ হাজার ২শত ঘনফুটের ৩টি পাথরের পারমিট প্রদান করে বান্দরবান জেলা প্রশাসন। অভিযোগ উঠেছে, এই তিনটি পারমিট দিয়ে সমগ্র উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন লক্ষাধিক ঘনফুট পাথর পাচার হয়ে যাচ্ছে। এদিকে জব্দকৃত পাথর উধাও হয়ে যাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, উধাও হওয়া পাথরগুলি নিলাম হলে সরকারের কমপক্ষে ৩ লক্ষাধিক টাকা রাজস্ব আয় হত।
পাথরের জিম্মাদার আপ্রু চিং মার্মা বলেন, জিম্মায় থাকা পাথরগুলো গত কয়েকদিন ধরে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পাথর ব্যবসায়ী হুমায়ন, জামাল উদ্দিন ফকির ও মহিউদ্দিন মহিম গায়ের জোরে নিয়ে গেছেন। তাদের সংঘবদ্ধ গ্রুপ রয়েছে। জীবনের মায়ায় আমি প্রতিবাদ কিংবা বাঁধা প্রদান করতে পারিনি। তবে লামা থানাকে জানিয়েছিলাম। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে পাথরগুলো দেখার দায়িত্ব ছিল লামা থানা পুলিশের।
লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন বলেন, জিম্মায় থাকা পাথর উধাও হওয়ার বিষয়ে শুনিনি। তবে জব্দকৃত পাথরগুলো স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় দেয়া হয়েছিল। স্টক থেকে পাথর উধাও হয়ে গেলে জিম্মাদারকে জবাব দিহি করতে হবে।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ জান্নাত রুমি বলেন, যেহেতু জব্দকৃত পাথরের ঘটনায় উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা চলমান, সেহেতু এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবেনা। আদালতের নির্দেশনা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন