সামাজিক বিচারে শাস্তির ভয়ে লামায় বৃদ্ধ দম্পতিকে খুন করা হয় : আদালতে নাতির স্বীকারোক্তি

NewsDetails_01

বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি ইয়াংছা পূর্বছোট পাড়ায় বৃদ্ধ দম্পতি হত্যার সাত দিনের মাথায় মূল আসামী ধরা পড়েছে। মোবাইল ট্যাকিংযের মাধ্যমে রবিবার চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকা থেকে ৩ ঘাতকের দু’জনকে আটক করা হয়। আটককৃরা লামা উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলী আক্কাসের নিকট ১৬৪ ধারায় ঘটনার মূল আসামী মংআইচিং মার্মা (২২) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সে নিহত দম্পতির আপন মেয়ের ঘরের নাতি এবং একই পাড়ার বাসিন্দা ক্যম্রাচিং মার্মার ছেলে। গত ২৪ মার্চ দিবাগত রাতে বৃদ্ধ দম্পতিকে গলা কেটে হত্যা করে ঘরে রক্ষিত টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে এ ঘটনায় নিহত দম্পতির ছেলে উহ্লামং মার্মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন।
ঘটনার মূল নায়ক মংআইচিং মার্মা লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেটের কাছে রবিবার বিকালে দেয়া স্বীকারোক্তিতে জানায়, সে তার দুইজন সহযোগীসহ গত ২৪ মার্চ দিবাগত রাতে উপজেলার ফাঁশিয়াখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ক্যহ্লাচিং মার্মা (৭০) ও তার স্ত্রী চিংহ্লামে মার্মা (৬৬) কে ঘুমন্ত অবস্থায় জবাই করে হত্যা করে। হত্যার কারন জানাতে গিয়ে মংআইচিং মার্মা আরও বলে, নিহতরা তার আপন নানা-নানী হয়। ৯ মাস আগে সে নানা-নানীর ঘর থেকে নগদ ৪৭ হাজার টাকা চুরি করে। চুরির ঘটনাটি জানা-জানি হলে তাকে সামাজিক বিচারে শাস্তি দিয়ে টাকা ফেরত দিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। এক পর্যায়ে টাকা ফেরত দিতে না পেরে সে নানা-নানীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে খাগড়াছড়ি উপজেলার ধর্মগড় হাদুকপাড়ার ধর্মজয় ত্রিপুরার ছেলে এ্যলিও ত্রিপুরা (২১) সহ তিনজন মিলে বৃদ্ধ দম্পতিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
হত্যা ঘটনার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য জেলা পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে ৫ সদস্যের টিম গঠন করে দেন। এ টিমকে সপ্তাহের মধ্যে আসামি ধরার আল্টিমেটামও দেন পুলিশ সুপার। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টিমের তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খাইরুল হাসান, উপ-পরিদর্শক খালেদ মোশারফ, উপ-পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন ও উপ-সহকারি পরিদর্শক দেবনাথের নেতৃত্বে রবিবার সকালে চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় দুইজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
দম্পতি হত্যার মূল আসামীসহ এক সহযোগিকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃতরা হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। পলাতক অন্য আসামীকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন