ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ এর প্রভাব : বৃষ্টিতে দুর্ভোগ বান্দরবানে
ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বান্দরবানে রবিবার রাত থেকেই হালকা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এদিকে শীতের পাশাপাশি বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ, শহরের রাস্তাঘাট বৃষ্টির কারণে অনেকটাই ফাঁকা।
রাতের বৃষ্টির পাশাপাশি দিনের বেলায় ও বৃষ্টি হওয়ায় খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ও কাজকর্ম ব্যাহত হয়েছে। বিশেষ করে সড়কে যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় রিকশা চালক, ভ্যানচালক, ইজি বাইক চালকরা পড়েছে বেকায়দায়।
জেলা সদরের রিকশা চালক আমিন বলেন, অসময়ে বৃষ্টি হচ্ছে তারপরে ও সকাল সকাল ঘর থেকে বের হয়েছি সারাদিনের ভাতের খরচ তো জুটাতে হবে, না হয় পরিবার পরিজন কি খাবে। আমিন আরো বলেন, রোদ বৃষ্টি, ঝড়-তুফান নিয়ে আমাদের সংসার, যত কিছুই হোক না কেন আমাদের সড়কে নেমে ভাড়া যোগাড় করে আয় করতে হয়, না হয় খিদা পেটে অভুক্ত থাকতে হয়।
এদিকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে হাটবাজারে বেচাবিক্রি কমে গেছে, দোকানীরা দোকান খুললেও নেই পর্যাপ্ত ক্রেতা। বেশির ভাগ সড়কে বৃষ্টির পানিতে কাঁদা হওয়ায় চলাচলেও ভোগান্তী পোহাচ্ছে সাধারণ জনগণ। জেলা শহরের পৌর এলাকার অধিকাংশ সড়ক ভাঙ্গা থাকার কারনে অসময়ে বৃষ্টির ফলে সড়কগুলোতে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, আর এতে সড়কে চলাচলরত যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
অন্যদিকে বৃষ্টিপাত এভাবে টানা কয়েক দিন চলতে থাকলে কৃষি জমিতে পানি জমে শাক সবজির বাগানসহ বিভিন্ন কৃষি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা, তবে কৃষকদের সচেতন থেকে বৃষ্টির পরিমানের ওপর নজর রেখে জমিতে তদারকির কথা জানালেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.ওমর ফারুক।
তিনি জানান, হালকা বৃষ্টি হলে সমস্যা নেই, তবে বেশি বৃষ্টিপাত হলে অবশ্যই ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে আর সেজন্য আমরা প্রতিটি ব্লকের কৃষি কর্মকর্তাদের কৃষকদের সর্তক থাকা এবং সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশনা দিয়ে রেখেছি।
তিনি আরো জানান, ৫-৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরণের ভারী বৃষ্টিপাত এবং কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা আছে। এমতাবস্থায়, পরিপক্ক সবজি ও ৮০% পরিপক্ক আমন ধান সংগ্রহ করে নিরাপদ জায়গায় রাখার জন্য কৃষকদের বলা হয়েছে সেই সাথে বোরো ধানের বীজতলা ও আমন ধানের জমির নিষ্কাশন নালা পরিষ্কার রাখা এবং বীজ বপন, চারা রোপণ, সেচ, সার ও বালাইনাশক প্রদান কার্যক্রম এই সময়টা বিরত থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে বান্দরবানের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনিষ্টিটিউট এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো.মাহবুবুল ইসলাম জানান, রবিবার থেকে ৬ ডিসেম্বর (সোমবার) সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ঘন্টায় বান্দরবানে ১৩ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।