বান্দরবানের শিল্পী সমাজের অনুষ্ঠানে সম্মান জানানো হবে রাজাকারকে !

NewsDetails_01

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় এবার সাংস্কৃতিক কর্মীদের শিল্পী সমাজের অনুষ্ঠানে ৭১ সালের এক রাজাকারকে সম্মান জানানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, আর এই বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় জেলায় ব্যাপক আলোচনা চলছে, অনেকে প্রকাশ করেছে ক্ষোভ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১১টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠিসহ বাঙালীদের বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য যারা নিরন্তর ভাবে স্বাধীনতার আগে থেকে কাজ করে ছিলেন এবং বর্তমানে যারা অবদান রাখছেন তাদের কথা স্বরণের জন্য আগামী ১লা সেপ্টেম্বর বান্দরবানের কেএসআই মিলনায়তনে শিল্পী সমাজের ব্যানারে জেলার শিল্পীদের মিলনমেলার আয়োজন করা হচ্ছে।
উক্ত আয়োজনে সম্মাননা প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রয়াত শিল্পীদের উদ্দ্যেশে এক মিনিট নিরবতার মাধ্যমে স্বরণ করার আয়োজন থাকছে। অনুষ্ঠানে জেলার দেড় শতাধিক বিভিন্ন ক্যাটাগরির শিল্পীর পাশাপাশি অতিথি হিসাবে জেলার বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
আরো জানা গেছে, অনুষ্ঠান আয়োজকদের মধ্যে অনেকে শিল্পী না হলেও সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছে অনুষ্ঠানের একটি লিফলেটে ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশ বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত আবদুর রশীদ মাষ্টার নামের এক রাজাকারের নাম থাকায়। যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশবিরোধী কর্মকান্ডের বান্দরবান জেলায় বেশ পরিচিত।

আবদুর রশিদ মাষ্টার, যিনি মুজিব বাহিনীর নথিতে সংক্ষেপে এ আর মাষ্টার নামে তালিকা ভুক্ত
অনুসন্ধানে জানা যায়, বান্দরবানে পৌর এলাকার চেয়ারম্যান পাড়ার বাসিন্দা আবদুর রশিদ মাষ্টার, যিনি মুজিব বাহিনীর করা রাজাকারের তালিকায় এ আর মাষ্টার নামে তিন নাম্বারে আছেন। আর প্রয়াত এই রাজাকারকে অভিনয় শিল্পী ক্যাটাগরিতে দুই নাম্বারে নাম রেখে তালিকা ভুক্ত করা হয়েছে। শিল্পী সমাজের অনুষ্ঠানে অন্যদের পাশাপাশি তাকেও এক মিনিট নিরবতার মাধ্যমে স্বরণ করা হবে। আর এই বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর বান্দরবান জেলার প্রগতিশীল মানুষ,সাংস্কৃতিক কর্মীদের কেউ কেউ ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মুক্তিযোদ্ধা পাহাড়বার্তাকে জানান,চেয়ারম্যান পাড়ার প্রয়াত আবদুর রশিদ মাষ্টার মুজিব বাহিনীর করা রাজাকারের তালিকায় এ আর মাষ্টার নামে তিন নাম্বারে আছেন।
আরো জানা গেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এই রাজাকার বান্দরবানের হিন্দু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজনকে ধর্মান্তরিত, নির্যাতন ও তাদের ঘরবাড়িতে লুটপাট করেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কাদের স্বার্থে বান্দরবানে প্রগতিশীল চেতনা লালন করা সাংস্কৃতিক কর্মীদের আসন্ন বড় একটি আয়োজনে একজন রাজাকারকে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্বরণ করতে উদ্দ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে, এই প্রশ্ন এখন জেলা জুঁড়ে।
এই ব্যাপারে অনুষ্ঠানে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে বলে স্বীকার করে অনুষ্ঠানের আহবায়ক চথুই ফ্রু মার্মা পাহাড়বার্তাকে বলেন, চেয়ারম্যান পাড়ার বাসিন্দা আবদুর রশিদ মাষ্টার রাজাকার কিনা এটা দেখার বিষয় নয়, আমরা উনাকে অভিনয় শিল্পী হিসাবে সন্মান জানাবো।

আরও পড়ুন