রাঙামাটি ট্রাজেডি : “কথা ছিলো মেহেদী রাঙা হাতে হাত রাখবো”

NewsDetails_01

রাঙামাটি শহরে কাপ্তাই লেকে ধসে পড়া ভবন। ছবি-বিজয় ধর
রাঙামাটি শহরে কাপ্তাই লেকে ধসে পড়া ভবন। ছবি-বিজয় ধর
“কথা ছিলো মেহেদী রাঙা হাতে হাত রাখবো, কথা ছিলো না এ হাতে কবরে তোমাকে শোয়াবো……..। জীবন সঙ্গিনী হয়ে থাকার কথা ছিল, এভাবে চলে যাওয়ার কথা ছিলো না। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত দান করেন”। রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে ভবন ধসে নিহত রুনার হবু স্বামী শরিফ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে হবু সহধর্মিনীর উদ্দেশ্যে এসব কথা লিখেন।
বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না উম্মে হাবিবা রুনার। গতকাল বুধবার ছিল তার মেহেদী অনুষ্ঠান, আজ বৃহস্পতিবার ছিল বিয়ে। দু-হাতে মেহেদী রাঙিয়ে নববধূ সাজে সংসার জীবনে প্রবেশের কথা ছিল তার। অনাগত সংসার জীবনের সাজানো-গোছানো স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেল মাত্র ১০ মিনিটের ভবন ধসের ঘটনায়। কাপ্তাই লেকের পানিতে তলিয়ে গেল যেন রুনা-শরীফের স্বপ্ন।
শহরের রিজার্ভ বাজার ২নং পাথর ঘাটা নিবাসী মো. শহীদের ৩য় সন্তান ব্যবসায়ী শরীফুল ইসলামের সাথে রুনার বিয়ের দিন ধার্য ছিল বৃহস্পতিবার। এর আগে এই দু’পরিবারকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে রুনা পাড়ি জমালো না ফেরার দেশে। ঘটনায় রুনার হবু স্বামী শরীফের মানসিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।
রুনার বান্ধবী রাঙামাটি সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী শারমিন আক্তার জানান, রুনা ছিল শান্ত এবং ধর্মীয় অনুশাসনে বড় হয়েছেন। বোরকা পরিধান করায় তার মুখ কেউ দেখতে পেত না। বুধবার রুনার মেহেদি অনুষ্ঠান ছিলো। এ নিয়ে তার পরিবার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখে কিন্তু মর্মান্তিক এ ঘটনায় শুধু রুনার পরিবার নয় পুরো এলাকা শোকে পাথর।
মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৫টায় শহরের রিজার্ভ বাজার এলাকার রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজ সংলগ্ন কাপ্তাই লেক ঘেষে গড়ে উঠা দোতলা ভবন পানিতে ডুবে যাওয়ায় পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। ঘটনায় এক পরিবারের দুই ছেলে, আরেক পরিবারের বাবা ও মেয়ে এবং একই এলাকার বাসিন্দা টিউশনী করতে আসা এক কলেজ ছাত্রীর অকাল মৃত্যু হয়।
এদিকে রাঙামাটি শহরের কাপ্তাই লেকে ভবন ধসে ৫জন নিহত এবং আহত হবার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। এক শোক বিবৃতিতে তিনি নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

আরও পড়ুন