নিরপেক্ষ ব্যক্তি ও সশরীরে বৈঠকের আহবান কেএনএফ এর

বান্দরবানে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ২য় বৈঠক

NewsDetails_01

বান্দরবানে পার্বত্য জেলার সংঘাতময় পরিস্থিতি নিরসনে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সাথে দ্বিতীয় ভার্চুয়াল বৈঠক সম্পন্ন করেছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। আর এই বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) পন্থী আছে অভিযোগ করে নিরপেক্ষ ব্যক্তি ও সশরীরে বৈঠকের আহবান জানিয়েছে কুকি চিন ন্যশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)।

আজ শুক্রবার (৪আগষ্ট) সকাল ১০ টায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সভা কক্ষ থেকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির ১০ সদস্য ও ভার্চুয়ালি কেএনএফের ৪ সদস্য এ বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠকে অপহরণ, হত্যা ও চলমান সংকট নিরসন করে জেলায় শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলে জানান শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চন জয় তংচঙ্গ্যা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মূখপাত্র কাঞ্চনজয় তংচঙ্গ্যা, রেভা. লালজারলম বম, লেলুং খুমি, বুদ্ধজ্যোতি চাকমা, মনিরুল ইসলাম মনু,মংচিংনু মারমা, কৃপা ত্রিপুরা, লালথাংজেল,রেভা. পাকসিম, এড. বাচিংথোয়াই মারমা এবং কেএনএফ মূখপত্র ব্রি. জে. মইয়া, কর্ণেল ভাপুয়াল, মেজর লিয়ানা, মেজর স্ট্যাওয়ার্ড উপস্থিত ছিলেন।

শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চন জয় তংচঙ্গ্যা জানান, কেএনএফ যে দাবিনামা পেশ করেছে, সেগুলোই বৈঠকে তুলে ধরেছে, পাহাড়ে যাতে শান্তি ফিরে আসে, মানুষ যাতে শান্তিতে থাকে, অস্থিতিশীল না হয় সেই ব্যাপারে কথা বলেছি আমরা।

NewsDetails_03

উল্ল্যেখ্য, কেএনএফ তাদের ফেসবুক পেজে গত ১৬ জুলাই হুমকি দেয় যে, নিরাপত্তা বাহিনীর পাহাড়ায় পর্যটন স্পটে কেউ বেড়াতে গেলে সেখানে ঘটে যাওয়া অঘটনের দায় কুকি-চিন নেবে না। আলোচনা চলাকালে পর্যটন স্পটগুলো খুলে না দেওয়া জন্য সরকারের কাছে দাবি জানায় তারা।

বৈঠকের পর কেএনএফ হেডকোয়ার্টারস মিডিয়া উইং কেএনএ লে. কর্ণেল সলোমন তাদের ফেসবুক পেইজে জানায়, আলোচনায় চিহ্নিত কয়েকজন জেএসএসপন্থী অংশ গ্রহণ করেছে। তাদের বেশির ভাগ বক্তব্যে শাসকগোষ্ঠীর সুরে। আমাদের স্বায়ত্বশাসনের দাবি রাষ্ট্রের কাছে, কোন কমিটির কাছে না। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে সব ধরণের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

কেএনএফ আরো বলেন, আগামী বৈঠক সশরীরে ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের আলোচনায় অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করতে হবে। সরকারী চাকুরী বা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের আশ্বাস দিয়ে কেএনএফ-এর সাথে আর কোন বৈঠক নয়, বৈঠক হবে কেএনএফ-এর দাবি এবং রাজনৈতিক ভাবে সমাধান নিয়ে। নাহলে ফের সশস্ত্র আন্দোলন সহ পাহাড় অচল হয়ে থাকবে।

সংঘাতময় পরিস্থিতির কারনে গত বছরের অক্টোবর থেকে জেলার উপজেলাগুলোতে পর্যটক যাতায়তে দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞা জারি ও চলতি বছরে ৫ শতাধিক বম জাতিগোষ্ঠির মানুষ ভারতের মিজোরামে আশ্রয় গ্রহন করে। নিজ বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় গ্রহন করে অন্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষও। এই ঘটনায় ৫ সেনা সদস্য নিহত ও কেএনএফ সদস্যসহ নিহত হয় আরো ১৬ জন, অপহরণের শিকার হয় অন্তত ২০ জন।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ মে কেএনএফ পার্বত্য চট্টগ্রামের ৯টি উপজেলা (বাঘাইছড়ি, জুরাইছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি, রোয়াংছড়ি, রুমা, থানছি, লামা ও আলিকদম) নিয়ে একটি পৃথক প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রণয়নসহ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রদান, প্রশাসনিক ব্যবস্থা থেকে আলাদা হিসেবে চিহ্নিতকরণ এবং জেলা ও আঞ্চলিক প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যবস্থা থেকে পৃথকীকরণ করা সহ পাহাড় ও বনাঞ্চল সংরক্ষণার্থে “ইনার লাইন পারমিট” (আই এলপি) প্রণয়ন সহ সর্বশেষ ৩টি দাবি প্রদান করে।

আরও পড়ুন