প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরেই সুখ ফেরালেন ইউএনও মুনতাসির জাহান

NewsDetails_01

রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নে যৌথখামার এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ তংচংগ্যা, একজন কৃষক। উঁচু পাহাড়ে বসত ও জুম চাষ করে সংসারের গ্লানি টানেন। সমতল হতে প্রায় ৭ শত ফুট ওপরে পাহাড়ের ঝরাজীর্ণ টিন-বেড়ার ছোট কুঁড়ে ঘর। স্ত্রী প্রভাতি তংচংগ্যা সন্তান সম্ভবা। অনাগত সন্তানের পথ চেয়ে দিনাতিপাত করা এই গরীব চাষাভুষা মানুষটির ঘরটি একদিন দুপুরে পুড়ে ছাই হয়ে গেল আগুনে লেলিহান শিখায়। জুম থেকে ফিরে ঘরের ধ্বংসাবশেষ দেখে মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল স্বামী-স্ত্রীর। মাথা গোঁজার শেষ ঠাঁয়টুকু পুড়ে ছাই গেল। পাহাড়ের চুড়ায় খোলা আকাশের নীচে কয়েকটা দিনও কেঠেছে এই হতদরিদ্র জুমচাষী পরিবারের।

দিনকয়েক পরে স্থানীয়দের পরামর্শে সহযোগিতার জন্য ধরনা দিলেন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে। ঘর তৈরির জন্য অল্প কয়েকটি টিনের সহযোগিতা চাইলেন। কাপ্তাই ইউএনও মুনতাসির জাহান শুনলেন বিশ্বজিৎ তংচংগ্যা,র জীবনযাপনের গল্প। এই গল্প ইউএনও মুনতাসির জাহানের ভেতরটাকে নাড়া দিল ভীষনভাবে। মর্মাহত হলেন তিনি, সিদ্ধান্ত নিলেন বিশ্বজিৎ তংচংগ্যাকে মাথাগোজার ঠাঁয় করে দিবেন। পেয়েও গেলেন সেই সুযোগ। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর।

এই প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরেই বিশ্বজিৎ তংচংগ্যার সুখ ফেরালেন ইউএনও মুনতাসির জাহান। উপজেলা টাস্কফোর্সের জরুরী সিদ্ধান্তে অল্পসময়ের মধ্যেই বিশ্বজিৎ তংচংগ্যাকে ঘর করে দিলেন তিনি। এই ঘরেই জন্মনিল বিশ্বজিৎ তংচংগ্যার ফুটফুটে একটি বাচ্চা মেয়ে। নাম শুভ্রা তংচংগ্যা।

NewsDetails_03

বিশ^জিৎ তংচংগ্যার স্ত্রী প্রভাতির ভাষ্যমতে, তাদের মেয়ে শুভ্রা সৌভাগ্য নিয়েই পৃথিবীতে হাজির হয়েছে। দিন বদলে গেছে তাদের, সুখ ফিরেছে সংসারে। পাহাড়ি কাপড় বোনা, হাসমুরগী পালন আর চলছে জুমচাষ।

সম্প্রতি পাহাড়ী উচু পথ মাড়িয়ে প্রায় ৭ শত ফুট ওপরে বিশ্বজিৎ তংচংগ্যার সুখের সংসার দেখতে গিয়েছিলেন ইউএনও মুনতাসির জাহান। সঙ্গী ছিলেন কাপ্তাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হান্নান, উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মনিরুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান।

কাপ্তাই ইউএনও মুনতাসির জাহান, বিশ্বজিৎ তংচঙ্গ্যার বর্তমান অবস্থা ব্যক্ত করতে গিয়ে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পোষ্টে লিখেন, এ গল্প পাহাড়ের গভীরতায়, ভালোবাসায় বাস করা এক পরিবারের। কিছু কাজে চরম প্রশান্তি থাকে। তেমনি একটি আনন্দ এই উপাখ্যান। ঘরপোড়া বিশ্বজিৎ তংচংগ্যাকে পাহাড়ের ৭০০ ফুট উপরে আকাশের কাছাকাছি জায়গাসহ একটা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সেমিপাকা নতুন বাড়ি করে দেয়া হয়েছে এবং তার মেয়ের জন্মই হয়েছে এই নতুন বাড়িতে। ভালো থাকুক বিশ্বজিৎ, প্রভাতি আর শুভ্রা। দীর্ঘজীবি হোক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন