রামগড়ে প্রাইভেট হসপিটালে মৃত প্রসূতি’কে চমেকে রেফার !

NewsDetails_01

খাগড়াছড়ির রামগড়ে মেমোরিয়াল হসপিটাল নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে মারা যাওয়া এক প্রসূতি রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) অস্ত্রোপচারের (সিজার) মাধ্যমে সন্তান প্রসবের জন্য ঐ হসপিটালের অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) গর্ভের সন্তানসহ মারা যান শিরিনা আক্তার (২৫)। তিনি রামগড়ের পার্শ্ববর্তী উত্তর ফটিকছড়ির প্রত্যন্ত হলুদিয়া মাস্টারপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষি শ্রমিক মো: আবুল খায়েরের স্ত্রী।

আবুল খায়ের বলেন,গত রোববার বেলা ১১টার দিকে প্রসব ব্যথা নিয়ে মেমোরিয়াল হসপিটালে স্ত্রী শিরিনকে নিয়ে আসেন তিনি। পরীক্ষা-নিরিক্ষার পর হসপিটালের ডাক্তার সিজার করতে হবে বলার পর তিনি সম্মতি দেন। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘন্টা খানিকপর ওটি থেকে রোগীকে বের করে এনে মহিলা ডাক্তার (ডা.শারমিন আক্তার সুমি) তাকে (স্বামী খায়ের) বলেন, রোগীর অবস্থা ভাল না। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এসময় অচেতন স্ত্রীর গায়ে হাত দিয়ে খায়ের ওই ডাক্তারকে বলেন, রোগী তো মনে হয় মারা গেছে। তার প্রতিত্তোরে ডাক্তার বলেন,মারা গেলে কি করার আছে, সব আল্লাহর হাতে।

আবুল খায়ের আরও বলেন, পরে ঐ হসপিটালের লোকজন তড়িগড়ি করে এ্যাম্বুলেন্স ডেকে সেখানে তুলে দেন অচেতন রোগীকে। রোগী জীবিত নেই এমন সন্দেহ মনে জাগায় তারা রামগড় বাজারে একটি ওষুধের দোকানে একজন পল্লী চিকিৎসককে দেখালে তিনি বলেন রোগী মারা গেছে।

NewsDetails_03

পরে ওই পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে তারা উপজেলা স্বান্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে শিরিনকে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডা. রোকসানা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গ্রামের সহজ-সরল দরিদ্র কৃষি শ্রমিক আবুল খায়ের বলেন, “আমরা গরীব মানুষ, কার কাছে বিচার চামু। আল্লাহই তাগো (ডাক্তার) বিচার করবো।”

একটি গোয়েন্দা সংস্থার স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, “হসপিটালের ওটিতেই রোগী মারা গেছে। নিজেদের দায়মুক্ত রাখতে তারা মৃত রোগীকে অন্যত্র রেফার করেছে।”

এদিকে, এ বিষয়ে কথা বলতে মেমোরিয়াল হসপিটালের ফোন করে ডা. শারমিন আক্তার সুমির মোবাইল ফোন নম্বর চাইলে একজন স্টাফ বলেন,’ডাক্তারের ফোন নম্বর দেয়া নিষেধ আছে।’ পরে
ওটিতে প্রসূতির মৃত্যু এবং মৃত রোগীকে চমেক হাসপাতালে রেফার করার অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে মেমোরিয়াল হসপিটালের মালিক পক্ষের একজন মো: আলম বলেন,”প্রসূতি এক্লাম্পসিয়া রোগে আক্রান্ত ছিল। শ্বাসকস্ট ও খিচুনীর কারণে সিজার করা সম্ভব নয় বলে দায়িত্বরত ডাক্তার ওই রোগীকে চমেক হাসপাতালে রেফার করে। ‘তাদের হসপিটালের ওটিতে ওই প্রসূতির মারা যাওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন।

রামগড় উপজেলা নির্বাহি অফিসার মমতা আফরিন বলেন,’এ ব্যাপারে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।’

উল্লেখ্য, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ভাড়া নিয়ে গত জুনে মেমোরিয়াল হসপিটালটির কার্যক্রম চালু করা হয়।

আরও পড়ুন