সরকারী নির্দেশনা মানছেনা বান্দরবানের মোবাইল নেটওয়ার্ক কর্মচারীরা

উপর মহল দায় চাপিয়ে শেষ

NewsDetails_01

বান্দরবানে বিভিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক কোম্পানীর মাঠ কর্মীদের এজেন্টরা সরকার নির্দেশিত সামাজিক দূরত্ব অমান্য করে বিভিন্ন দোকানে যাতায়াত করছে। যার ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রামন থেকে বাঁচতে সরকার নির্দেশিত বিধি নিষেধ না মানার কারনে বান্দরবানে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে আশংকা প্রকাশ করছে অনেকে।

সূত্র জানায়, রবি নেটওয়ার্কের বান্দরবান সদররস্থ অফিসে আজ সকাল ৯ টায় গণ জামায়েত সৃষ্টি করে কর্মীদের দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জন সচেতনতা সৃষ্টি দুরে থাক, তারা সরকারী কোন নির্দশনা মানছে না। কোম্পানী এরিয়া ম্যানেজাররা কর্মীদের উপর দায় চাপিয়ে দিয়ে ঘরে বসে আরাম করছেন, আর কর্মীরা এক দোকান থেকে আরেক দোকানে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব না মেনে মোবাইলে দোকানদারদের অর্থ লোড দিচ্ছেন।

হাফিজুল নামে এক ব্যক্তি এই প্রতিবেদককে জানান, সরকার সব শ্রেণী পেশার মানুষকে করোনা দুর্যোগ চলাকালীন সময় পর্যন্ত নিজ ঘরে অবস্থান করতে বলেছেন। মোবাইল কোম্পানীর লোকজনতো কখনো মুদি দোকানে আবার কখনো ফার্মেসিতে ঘুরাঘুরি করছে। কোন কারণে যদি বান্দরবান শহরে করোনা ভাইরাস ছড়ায় তাহলে এরাই প্রথম দায়ী হবেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ।

আরো জানা যায়, সকাল পৌনে ১০টার দিকে বান্দরবান রবি অফিসে সামনে বেশ কয়েকজন কর্মীকে লক্ষ্য করা যায়। তারা মিটিং শেষ করে অফিস থেকে বের হয়ে যার যার এলাকায় চলে যাচ্ছেন। আর এই মিটিং এ তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেনি।

NewsDetails_03

রবি নেটওয়ার্কের এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তারা মিটিং-এ ১৪/১৫ জন উপস্থিত ছিলেন। মিটিং আধা ঘন্টা স্থায়ী হয়। করোনা ভাইরাস সংক্রামন রোধে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে। কিন্তু আপনারা গনজামায়েত হয়ে মিটিং করলেন কিভাবে। এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললেন “ স্যারেরা যা নির্দেশনা দেন তা আমাদের পালন করতে হয়,”। তিনি আরো বলেন, অফিসের কোন বিষয় নিয়ে কিছু বললে আমাদের চাকরী থাকবে না।

দেশের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ঘর থেকে বের হওয়াই বিপদজনক। সেখানে মোবাইল কোম্পানী গুলো তাদের ব্যবসা ঠিকিয়ে রাখতে সেবার নামে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ২টি এজেন্ট, মুষ্ঠিমেয় কয়েকটি ফার্মেসী ও মুদি দোকানে মোবাইল রিচার্জ ও বিকাশ কার্যক্রম চালু রয়েছে। জেলা শহরের ৮০ ভাগ এজেন্ট ও মোবাইল সেবাদানকারী দোকান বন্ধ রয়েছে। তাই চলমান সংকটে মোবাইল খাতে কোম্পানী গুলোর তেমন কোন ব্যবসা হচ্ছে না। তারপরও কর্মীদের ছুটি না দিয়ে মার্কেটে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি ভালভাবে নিচ্ছেন না সচেতন মহল।

এ বিষয়ে রবি নেটওয়ার্কের এরিয়া ম্যানেজার কাজী নাজমুল শাহাদাত রায়হান, গণজামায়েতের মাধ্যমে মিটিং এর কথা অস্বীকার করে বলেন, কর্মীরা অফিসে হাজিরা দিয়ে তাদের ফিল্ডে চলে যায়। যেহেতু সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তাই কর্মীদের ফিল্ডে থাকতে হয়। জনগনের সেবা দেয়ার জন্য তারা মাঠে কাজ করছে।

এদিকে গ্রামীন নেটওয়ার্কের ডিএসআর জমির উদ্দিন বলেন, বর্তমানে তাদের কোম্পানীর ৬ জন কর্মী ফিল্ডে রয়েছে, ব্যবসা তেমন নাই। তারপরও গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় কর্মীদের মাঠে রাখা হয়েছে। কর্মীদের ছুটির বিষয়ে তিনি বলেন, কর্মীদের ছুটি দেয়ার কোন আদেশ এখনো আসেনি।

প্রসঙ্গত,করোনা ভাইরাসের সংক্রামন ঠেকাতে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ের সকল প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষনা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। মোবাইল কোম্পানীর মাঠ কর্মীরা সারাদিন যেহেতু বহু দোকানে যাতায়াত রয়েছে এবং তাদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রামনের ঝুঁকিও বেশী রয়েছে। এতে একদিকে কর্মীদের জীবন অন্যদিকে পুরো জেলায় বসবাসরত সাধারণ মানুষও অতি ঝুঁকির মুখে পড়বে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মোবাইল কোম্পানী ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন সমাজ।

আরও পড়ুন