উন্নয়ন করলেই হবে না, তা যেন জনগণের কল্যাণে লাগে, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সোসাইটি অব কার্ডিওভাসকুলার ইন্টারভেনশন (বিএসসিআই) এর জাতীয় বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের প্রসঙ্গে এই আহ্বান জানান তিনি।
আবদুল হামিদ বলেন, “যে উন্নয়ন সাধারণ মানুষের কল্যাণে আসে না বা সামর্থ্যের অভাবে ভোগ করতে পারে না, তা কখনোই সার্বজনীন হতে পারে না। তাই স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন হতে হবে চাহিদাভিত্তিক; জনগণের সামর্থ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর।”
সাধারণ মানুষের জন্য কম খরচে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতের আহ্বানও জানান রাষ্ট্রপ্রধান।
“আমাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, এ দেশের অনেক মানুষেরই উন্নত চিকিৎসা সেবা নেয়ার মতো সামর্থ্য নেই। তাই তাদের জন্য কম খরচে উন্নত চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করতে হবে।”
সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার কথাও চিকিৎসকদের মনে করিয়ে দেন আবদুল হামিদ বলেন,“আপনার অনেক কষ্ট করে ও ত্যাগের বিনিময়ে ডাক্তার হয়েছেন এবং আজকের অবস্থানে পৌঁছেছেন। কিন্তু এ অবস্থানে পৌঁছতে সাধারণ মানুষের অবদানও কিন্তু কম নয়। তাই সমাজের প্রতি আপনাদের যথেষ্ট দায়বদ্ধতা আছে। আর সেই দায়বদ্ধতা থেকেই সাধারণ মানুষ যাতে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।”
![NewsDetails_03](https://paharbarta.com/wp-content/uploads/ad-space-news-details.png)
প্রতি সপ্তাহে বা মাসে অন্তত একদিন প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষকে চিকিৎসা দিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চল থেকে উঠে আসা আবদুল হামিদ। সব মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
“সরকারের একার পক্ষে দেশের শতভাগ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে বেশ কয়েকটি আধুনিক ও উন্নতমানের হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসব হাসপাতালে সর্বাধুনিক চিকিৎসাও দেওয়া হচ্ছে। এতে চিকিৎসার জন্য বিদেশগামী লোকের সংখ্যা কমে আসছে। তাই আমাদেরকে সর্বাধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে।”
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের এই সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি এই রোগ এড়াতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা মেনে চলা, ধূমপান ত্যাগ করা, কায়িক পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যয়াম করার উপর জোর দেন।
“হৃদরোগের চিকিৎসায় ওষুধ ও প্রযুক্তির পাশাপাশি রোগের কারণ ও প্রতিরোধের উপায় সর্ম্পকেও জানা অত্যন্ত জরুরি। আমি মনে করি হৃদরোগের কারণ এবং প্রতিরোধের উপায় ও কৌশল সম্পর্কে জনগণকে অবহিত ও সচেতন করা গেলে এ রোগের প্রকোপ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।”
হৃদরোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ব্যয়বহুল হওয়ায় রোগ প্রতিরোধের উপরই জোর দিতে সবাইকে পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপতি।
রাজধানীর একটি হোটেলে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসসিআইর সভাপতি অধ্যাপক আফজালুর রহমান। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহমুদ হাসান, মহাসচিব এম ইকবাল আর্সলান, বিএসসিআই এর মহাসচিব কায়সার নাসরুল্লাহ খান প্রমুখ। সূত্র : বিডিনিউজ