খাগড়াছড়িতে খয়রাতি রেশনের চাল নিয়ে চালবাজি

গমের পরিবর্তে চাল !

NewsDetails_01

খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ১২টি গুচ্ছগ্রামের খয়রাতি রেশনের চাল নিয়ে একটি সিন্ডিকেট’র কোটি টাকার বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। পার্বত্য চট্রগাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশকে উপেক্ষা করায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কার্ড হোল্ডাররা।

জানা যায়, ১৪ ফেব্রুয়ারী পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মোঃ হায়দার আলী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গুচ্ছগ্রামগুলোতে গমের পরিবর্তে চাল রুপান্তর করার নিদের্শ দেন। কিন্তু গুচ্ছ গ্রাম প্রকল্প চেয়ারম্যানরা মন্ত্রণালয়ের চিঠির আদেশ উপেক্ষা করে কার্ড হোল্ডারদের কিছু কিছু চাল দিয়ে খাদ্য গুদামে গম না থাকার কথা বলে বাজারদরের চেয়ে সবচেয়ে কম মূল্য দরে নগদ টাকা নিতে বাধ্য করে রেশন ভোগীদের। এদিকে প্রতিটি রেশন কার্ডগুলোতে চাল ও গম বিতরণ করা হয়েছে মর্মে কার্ড ইস্যু করেন প্রকল্প চেয়ারম্যনরা।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, পানছড়ি উপজেলার ১২টি গুচ্ছগ্রামের ৪১৩৫টি রেশন কার্ডের অনুকূলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বরাদ্ধের অংশ হিসাবে ৮৭৭ মেঃ টন চাউল বরাদ্ধ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকল্প চেয়াারম্যানরা বরাদ্দকৃত চাউল কার্ডধারীদের মাঝে সম্পূর্ণ বিতরণ না করার অভিযোগ উঠেছে। কার্ডপিছু তিন মাসের বরাদ্দের ২’শ ১১ কেজি চাউল দেওয়ার কথা থাকলেও লোগাং গুচ্ছগ্রামের রেশন কার্ডধারী নূর জাহান বেগম বলেন, প্রকল্প চেয়ারম্যান ২’শ ১১ কেজি চাউলের মধ্যে ১’শ ৫০ কেজি চাউল দিয়ে তার কাছ থেকে আরো ৬০ (ষাট) টাকা নিয়ে নিচ্ছে।

জিয়ানগর গুচ্ছগ্রামের কার্ডধারী মোসলেম উদ্দিন বলেন তাকে ১৫০ কেজি চাউল দিয়ে আর ৪০০ টাকা দেওয়ার হয়েছে। ফাতেমা নগর গ্রামের কার্ডধারী মোঃ হাসেম বলেন, তাকে ১’শ কেজি চাউল দিয়ে দুই হাজার ১’শ টাকা দেওয়া হয়েছে।

দমদম গুচ্ছগ্রামের ইউনুছ জানান ,তাকে ১৫০ কেজি চাউল দিয়ে পাঁচ’শ টাকা দেওয়া হয়েছে।

পানছড়ি বাজার গুচ্ছগ্রামের পরিমল দে বলেন, আমাকে ১’শ ৫০ কেজি চাউল দিয়ে গমের একটা স্লিপ ধরিয়ে দিচ্ছে। মোহাম্মদপুর গুচ্ছগ্রামের সাফিয়া আক্তার বলেন তার স্বামীর নামীয় কার্ডের খাদ্যশস্য আনতে গেলে তাকে ১৫০ কেজি চাউল ৫০০ টাকা দেওয়া হয়।

NewsDetails_03

খাদ্যশস্য বিতরণে দমদম গুচ্ছগ্রামের তদারক কর্মকর্তা অরুনাংকর চাকমা বলেন, প্রকল্প চেয়ারম্যানের নামে ডিও হয়, আসলে আমাদের তেমন কিছু করার নাই। বাজার গ্রামের তদারক কর্মকর্তা সাব্বির হোসেন বলেন আমাকে কেউ অভিযোগ করেনি।

উল্টাছড়ি গুচ্ছগ্রামের তদারক কর্মকর্তা উষা মগ বলেন,প্রকল্প চেয়ারম্যান চাল বিতরণ করবে কি না তা আমাকে জানায়নি।

পানছড়ি খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মনি শংকর চাকমা বলেন, আমরা প্রথমে গম ও চাল বিতরন করার চিঠি পেয়েছিলাম। গুদামে গম মজুদ না থাকায় শুধূ চাল বিতরণ করা হয়। পরবর্তীতে আরেক চিঠিতে গমের পরিবর্তে চাল বিতরন করার চিঠি আসে। সেই অনুকুলে পূর্ণরায় গমের পবিবর্তে চাল বিতরন করছি প্রকল্প চেয়ারম্যানদের। চাল বা গম র্কাড হোল্ডাররা পায় কি না কোথাও উড়ে যায় কি না সেটা আমাদের দেখার বিষয় না।

পানছড়ি খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কফিল উদ্দিন জানান, চিঠি দেরিতে পাওয়ায় এই সমস্যা হয়েছে।

এদিকে গুচ্ছগামগুলোতে খাদ্যসশ্য বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে আ.লীগের সভাপতি আব্দুল মমিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া আফরোজ অনিয়মের অভিযোগ শোনেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি প্রকল্প চেয়ারম্যানদের কার্ড হোল্ডারদের মাঝে চাল বিতরন করার নির্দেশ দিয়েছি।

আরও পড়ুন