খাগড়াছড়িতে গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক এবং তরুণ সাংবাদিক অপু দত্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও কুশপুত্তালিকা দাহ করেছে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলমের সমর্থকরা। শুক্রবার হাইকোর্টের সামনে থেকে ন্যায় বিচারের প্রতীক গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্য অপসারণ এবং হেফাজত ইসলাম কর্তৃক সারাদেশে থাকা বিভিন্ন মূর্তি ও ভাস্কর্য অপসারণের দাবির প্রেক্ষিতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক এবং বাংলানিউজ টোয়ান্টিফোর ডটকম’র খাগড়াছড়ি স্টাফ রিপোর্টার অপু দত্ত।
স্ট্যাটাস দেয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার বেলা ১১টায় খাগড়াছড়ি শহরের নারকেল বাগানস্থ জেলা আওয়ামীলীগের একাংশের কার্যালয়ের সামনে থেকে অপু দত্তের কুশপুত্তালিকা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়ক হয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করে শাপলা চত্ত¡রে এসে সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে অপু দত্তের কুশপুত্তালিকা দাহ করা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের একাংশের নেতা কামাল পাটোয়ারী, নুরুন্নবী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, অপু দত্ত ফেসবুক স্ট্যাটাসে বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার ভাস্কর্য অপসারণের দাবি তুলে দু:সাহসিকতা দেখিয়েছে। যা রাষ্ট্রদ্রোহীতার সামিল। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান বক্তারা।
এর আগে, মিছিল থেকে “অপু দত্তের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও-গুড়িয়ে দাও, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে উস্কানী -হুমকিমূলক স্লোগান দেয়া হয়।
অপু দত্ত মুঠোফোনে জানান, আমি স্বাধীনতা পক্ষের মানুষ হয়ে কোন ভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, জিয়া রহমান ও জাতীয় চার নেতার ভাস্কর্য অপসারণের কথা বলতে পারি না। হেফাজত ইসলাম সহ বেশ কয়েকটি ধর্ম ভিত্তিক সংগঠন গত শুক্রবার হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য অপসারণে আনন্দ মিছিল পরবর্তী সারাদেশে থাকা মূর্তি-ভাস্কর্য অপসারণের দাবি জানান। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি তাহলে বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার ভাস্কর্যগুলো কবে অপসারণ করা হচ্ছে? কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহল এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক পায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে।
সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হুমকিমূলক স্লোগান দিয়ে মিছিল সমাবেশ করার অনুমতি নেয়া হয়েছে কিনা সে বিষয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ(এসআই) হায়াত উল্লাহ’র কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, মিছিল সমাবেশ করতে অনুমতি নেয়া হয়নি।
পুলিশের উপস্থিতিতে সাংবাদিক ও গণজাগরণ মঞ্চের এক সংগঠকের ভাবমূর্তি হননের উদ্দেশ্যে এমন কার্যক্রম করতে দেয়ায় ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, বিগত পৌর নির্বাচনের সময় মেয়র রফিকুল আলমের বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক অপু দত্তকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠে মেয়রের বিরুদ্ধে। সে অভিযোগের বিষয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন অপু দত্ত।