খাগড়াছড়ির পানছড়িতে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের বিক্ষোভের নৈপথ্যে উঠে এসেছে বিদ্যুৎয়ের ইউনিট কারসাজি ও অবৈধ উপায়ে ব্যবহারের বিষয়। অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের শর্ত লঙ্ঘন করে পানছড়ি উপজেলার পাচ শতাধিক ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চার্জ করা হচ্ছে আবাসিক মিটারের সাহায্যে। এতে করে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে, পানছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বাহার মিয়ার নামীয় বিদ্যুৎ সংযোগে দীর্ঘদিন ধরে জমা থাকে ইউনিট সমন্বয় করে বিল দেয়ায় তাঁর উস্কানীতে বিদ্যুৎ গ্রাহক ও অটোরিক্সা চালকরা মাঠে নেমেছেন।
পানছড়ি ইজি বাইক মালিক সমিতির সভাপতি অমিত চাকমা জানান, পানছড়িতে প্রায় ৫শ অটোরিক্সা চলাচল করছে। গাড়ি চার্জ করতে এবং বাড়িতে ব্যবহার করে যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে তার বিপরিতে বিল দিতে আমরা প্রস্তুত। কিন্তু মিটার রিডাররা আমাদের ব্যবহারের চেয়ে অতিরিক্ত বিল প্রদান করছেন।
অটোরিক্সা চালক মাহবুব রহমান জানান, আজ গাড়ি আছে তো কাল নাই। তাই বাণিজ্যিক মিটারের সংযোগে যেতে মালিক ও চালকদের আগ্রহ নাই।
পানছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ সূত্র জানায়, প্রতিটি আবাসিক মিটারের সংযোগে এক কিলোওয়াট ক্ষমতাধারণের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চার্জিংয়ে ৪-৫ কিলোওয়াট করে বিদ্যুৎ খরচ হয়। যেসব আবাসিক সংযোগে অটোরিক্সা চাজিংয়ের কাজ চলছে সেসব সংযোগ গ্রাহকদের বাণিজ্যিক মিটারের আওতায় আনতে কাজ শুরু হলেও তথ্য গোপন রাখার এই উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। তাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই যেসব মিটারে চার্জিংয়ের প্রমাণ মিলবে সেসব গ্রাহকদের প্রতি অটোরিক্সার বিপরিতে ৪০০ ইউনিট করে বিল দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সে মোতাবেক মিটার রিডাররা কাজ করছেন।
পানছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই যেসব মিটারে অটোরিক্সা চার্জ দেয়া হচ্ছে তাদের প্রতিটি অটোরিক্সার বিপরিতে ৪০০ ইউনিট করে বিল দেয়া হচ্ছে। অতীতে পানছড়িতে বিদ্যুৎ বিভাগের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম না থাকায় কিছু কিছু কর্মচারী অসৎ উপায় অবলম্বন করে গ্রাহকদের বিভিন্ন সুবিধা দিত।
পানছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বাহার মিয়ার মিটারে প্রায় ৮হাজার ইউনিট বিল বকেয়া রয়েছে। আমি দায়িত্বে আসার পর এসব ইউনিট সমন্বয় করে বিল দেয়া শুরু করায় তিনি সাধারণ গ্রাহক ও অটোরিক্সা সংশ্লিষ্টদের উস্কিয়ে দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করাচ্ছেন, এটি সম্পূর্ণ বেআইনী। যেসব গ্রাহক সংযোগ স্থাপনের শর্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ আইন ২০১৭ এর খসড়া অনুসারে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বাহার মিয়া জানান, প্রতিমাসে ৫০০০-৬০০০ টাকা করে বিল আসছে। তা আমি নিয়মিত পরিশোধও করছি। গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যুৎ গ্রাহকরা বিক্ষোভ করায় প্রশাসনের অনুরোধে আমি বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করি। এই আন্দোলনের পেছনে আমার কোন ইন্দন নাই।
উল্লেখ্য, ইউনিটের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল প্রদানের প্রতিবাদে মঙ্গলবার(১৬ জানুয়ারী) পানছড়ি উপজেলা সদরে বিক্ষোভ প্রর্দশন করেন গ্রাহকরা।