মামলার পর রামগড়ের সেই শিক্ষক লাপাত্তা

NewsDetails_01

খাগড়াছড়ির রামগড়ের প্রত্যন্ত এলাকা থানাচ্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে ৫ম শ্রেণির এক উপজাতীয় ছাত্রীকে সহকারি শিক্ষক বেলায়েত হোসেন যৌন নিপীড়ন করার প্রতিবাদে আজ শনিবার (১৪ মে) কোন ছাত্রছাত্রী স্কুলে যায়নি। অভিযুক্ত শিক্ষককে অপসারণসহ কঠোর শাস্তির দাবিতে অভিভাবকরা তাদের কোন ছেলে-মেয়েকে শনিবার স্কুলে পাঠায়নি।

বৃহষ্পতিবার (১২ মে) বেলা ১টায় স্কুল ছুটির পর সহকারি শিক্ষক বেলায়েত হোসেন হোমওয়ার্কের কথা বলে ৫ম শ্রেণির এই ছাত্রীকে শ্রেণীকক্ষে ডেকে এনে তার গোপনাঙ্গসহ র্স্পশকাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী ঐ ছাত্রীকে স্কুলের বাহিরে এনে একশ টাকার একটি নোট দিয়ে কাউকে কিছু না বলার কথা বলে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা শুক্রবার রাতে শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, মামলা রুজুর পর গ্রেফতার হওয়া থেকে বাঁচতে অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানায় পুলিশ। শিক্ষকের হাতে ছাত্রীর যৌন নিপীড়নের ঘটনায় থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেচ ম্যাপ এলাকার বিক্ষুব্দ গ্রামবাসিরা অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারনসহ কঠোর শাস্তির দাবিতে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় বৃহষ্পতিবার। এ সিদ্ধান্তের ফলে শনিবার(১৪ মে) কোন ছেলে-মেয়ে স্কুলে আসেনি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী বলেন, স্কুলের ১২০ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে ১০-১২জন ছাড়া সকলেই ত্রিপুরা উপজাতি। ভুক্তভোগী ছাত্রীও ত্রিপুরা। ফলে এ ঘটনার জন্য শনিবার কোন ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠায়নি অভিভাবকরা।

NewsDetails_03

রামগড় থানার ওসি মোহাম্মদ শামছুজ্জামানসহ অন্যান্য পুলিশ কমকর্তার উপস্থিতিতে ৫ম শ্রেণির ত্রিপুরা উপজাতি এক ছাত্রী অভিযোগ করে বলে, শিক্ষক বেলায়েত ক্লাসে অনেকদিন তার শরীরের বিভিন্ন র্স্পশকাতর স্থানে হাত দিয়ে নিপীড়ন করতেন। ঐ ছাত্রীর বৃদ্ধা মা বলেন, এ কারণে তার মেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়।

এদিকে, ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় ছাত্রছাত্রীদের স্কুল বয়কটের প্রেক্ষিতে শনিবার রামগড় থানার ওসি, স্কুল পরিচালনা কমিটি, ত্রিপুরা সংসদের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় কারবারি, ইউপি মেম্বারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ স্কুল কেচ ম্যাপ এলাকার অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করেন। স্কুল কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে অপসারণ ও তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠানোর জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ জানানো হয়। ওসি মোহাম্মদ শামছুজ্জামান ও ত্রিপুরা সংসদের রামগড় উপজেলার সভাপতি হরিসাধন বৈষ্ণব বৈঠকে বক্তব্য দেন।

এদিকে, রামগড় উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: বেলায়েত হোসেন বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে সাময়িক বরখাস্তসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

রামগড় থানার ওসি মোহাম্মদ শামছুজ্জামান বলেন, শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা ফুলবালা ত্রিপুরা ২০০০ সালের নারী ও শিশু র্নিযাতন দমন আইনের (সংশোধনী ২০২০) ১০ ধারায় মামলা রুজুর পরই পুলিশ আসামী বেলায়েত হোসেনকে গ্রেফতার করতে অভিযান শুরু করেছে। গা ঢাকা দিলেও খুব সহসাই তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়বেন।

আরও পড়ুন