রাঙামাটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে

NewsDetails_01

করোনা আক্রান্ত নিয়ে হাফ সেঞ্চুরীর পথে রয়েছে পার্বত্য জেলা রাঙামাটি। জেলা শহরের গন্ডি পেরিয়ে উপজেলাগুলো সংক্রমিত হওয়ায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝে। স্বস্তিতে নেই স্থানীয় প্রশাসনও। ফলে, এখনই কঠোর না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে রাঙামাটিবাসীর জন্য।

গত ১৯ মে একদিনে ১৭ জন আক্রান্ত হওয়ার পর মাঝখানে বিরতি দিয়ে আরো ৩ জনের দেহে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাতে নতুন করে ৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬ জন। আশার খবর, এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫ জন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙামাটি সিভিল সার্জন অফিসের করোনা ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা: মোস্তফা কামাল জানান, সর্বশেষ তিন জন আক্রান্ত হয়েছেন । এদের মধ্যে একজন হচ্ছেন রাঙামাটি পৌর এলাকার, একজন কাউখালীর ও অন্য জন নানিয়ারচর উপজেলার।

তিনি জানান, শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের ফৌজদারহাটের বিশেষায়িত হাসপাতাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) এবং চট্টগ্রাম ভেটেনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা মোট ৪৫ টি রিপোর্টের মধ্যে ৩ টি পজিটিভ এবং ৪২ টি নেগেটিভ এসেছে।এদিকে, রাঙামাটি সদরে শিশুসহ প্রথম আক্রান্ত ৪ জনসহ রাজস্থলীর একজন ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়েছেন।

NewsDetails_03

এদিকে, জেলা শহরের গন্ডি পেরিয়ে উপজেলাগুলো সংক্রমিত হওয়ায় উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝে। স্বস্তিতে নেই স্থানীয় প্রশাসন। এরই মধ্যে জেলার ৭টি উপজেলায় হানা দিয়েছে করোনা। উপজেলাগুলো হচ্ছে রাজস্থলী, নানিয়ারচর, কাউখালী, লংগদু, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি ও রাঙামাটি সদর। বাকী রইল ৩টি উপজেলা। পুরো জেলায় করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পেছনে একে অপরকে দুষছেন স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা।

স্থানীয়দের মতে, প্রশাসনের নমনীয় মনোভাবের জন্যই সংক্রমন বৃদ্ধির কারণ। কোন কোন ক্ষেত্রে বাইরের জেলার মানুষ অবাধে প্রবেশ করছে রাঙামাটিতে। এ বিষয়ে আরো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করা উচিত। তার ওপর করোনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে খুব কম সংখ্যক। এতে করে পুরো জেলার চিত্রটা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

তবে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের মতে, মানুষের অসাবধানতা, খাম খেয়ালীপনা, স্বাস্থ্য বিধি না মানার কারণে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষকে কোনভাবেই ঘরে রাখা যাচ্ছে না। করোনার সংক্রমন ঠেকাতে স্থানীয় প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল লক্ষনীয়।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত বাসা ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ছিলেন ২ হাজার ৬ শত ৬৬ জন। ছাড়পত্র পেয়েছেন ২ হাজার ৯৮ জন। বর্তমানে আইসোলোশনে আছেন ৬ জন। এ পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ করে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে ৮২২ জনের। রিপোর্ট এসেছে ৬৩১ জনের। যারমধ্যে ৪৬ জনের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তবে জেলায় কোন মৃত্যু নেই।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, গত ৬ মে রাঙামাটিতে প্রথমবারের মতো করোনা আক্রান্ত হন ৪ জন। এরপর ১২ মে ১ জন, ১৩ মে ৯ জন ,১৪ মে ১১ জন , ১৬ মে ১ জন, ১৯ মে ১৭ জন এবং ২২ মে ৩ জন আক্রান্ত হলো করোনায়। এরমধ্যে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার নার্সসহ ১৭ জন রয়েছেন।

আরও পড়ুন