কাপ্তাই জেটিঘাটে ভাসমান হাট : মৌসুমী ফলের জমজমাট বিকিকিনি

NewsDetails_01

এক একটি বোট ভীড়ছে ঘাটে, মূহুর্তেই বেপারিরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে সেই বোটের উপর। কোন কোন বোটে আছে কাঁঠাল ও কলা, আবার কোন কোন বোটে আছে আম, আনারস ও জাম। দৃশ্যটি রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র জেটিঘাট এলাকা সংলগ্ন কাপ্তাই লেকে।

আজ শনিবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় জেটিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কাপ্তাই লেক ধরে ইঞ্জিন চালিত বোট যোগে বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি, ইজাছড়ি, রাঙামাটি সদরে মগবান, জীবতলি, কাপ্তাইয়ের দূর্গম হরিনছড়া এলাকা সহ নানা জায়গা হতে এইসব মৌসুমী ফল শনিবার সাপ্তাহিক বাজার কাপ্তাই জেটিঘাটে নিয়ে আসছেন প্রান্তিক কৃষকরা। বোট ঘাঁটে ভীড়ার সাথে সাথেই তাদের ক্ষেতের উৎপাদিত এই সব মৌসুমী ফল মুহূর্তেই বেপারিরা ঘাঁট হতে কিনে নিচ্ছেন। এ যেন ভাসমান হাট। জানা যায়, প্রতি শনিবার বিশেষ করে এই ফলের মৌসুমে ১০ লাখ টাকার মতো বিভিন্ন মৌসুমী ফল বিকিকিনি হয়।

কথা হয় কাপ্তাইয়ের জেটিঘাটে কাঁঠাল ও আম বিক্রি করতে আসা রাঙামাটি সদর উপজেলার মগবান এলাকার কৃষক স্নেহ রঞ্জন চাকমা ও নয়ন চাকমার সাথে। তাঁরা জানান, তাদের ২ একর কৃষি জমিতে এই বছর কাঁঠাল ও আমের ভালো ফলন হয়েছে। সাপ্তাহিক বাজার শনিবারে ইঞ্জিন চালিত বোট যোগে এইসব ফল জেটিঘাট বাজারে নিয়ে আসি। তবে বোট ঘাঁটে ভীড়ার সাথে সাথেই বেপারিরা এইসব ফল ঘাঁট হতে কিনে নেয়, আর বাজারে তুলতে হয় না। তবে এই বছর বেশ লাভবান হয়েছি আমরা।

কেংড়াছড়ি এলাকার কৃষক ধনপতি চাকমা আনারস ও রুপালি আম নিয়ে এসেছেন সাপ্তাহিক এই বাজারে। তিনি জানান, ঘাঁট হতে বেপারিদের কাছে পাইকারি বিক্রি করে দিয়েছি আনারস ও আম। কষ্ট করে আর বাজারে তুলতে হয় নাই।

NewsDetails_03

কথা হয়, চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা এলাকার বেপারি জানে আলম ও আজিম এর সাথে। তাঁরা দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে এই জেটিঘাট হতে মৌসুমী ফল সহ পাহাড়ে উৎপাদিত বিভিন্ন ফল নিয়ে রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন হাটে বিক্রি করছে।

তাঁরা জানান, পাহাড়ের উৎপাদিত এই সব ফল বিষমুক্ত, তাই সমতলের মানুষের কাছে এর চাহিদাও বেশী। আমরা এসব করে লাভবান হচ্ছি এবং আমাদের সংসারও চলছে বেশ।

দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এই জেটিঘাট এলাকায় ঘাঁট শ্রমিকের কাজ করছেন আবু তাহের ও হারুন মাঝি। তাঁরা জানান, সাপ্তাহিক শনিবার এই জেটিঘাট বেশ জমজমাট হয়ে থাকে। বিশেষ করে ফলের মৌসুমে শত শত ইঞ্জিন চালিত বোট দিয়ে পাহাড়ের বিভিন্ন প্রান্ত হতে কৃষকরা খুব সকালে তাদের ক্ষেতের উৎপাদিত ফল নিয়ে আসে। আমরা বোট হতে উপরে তুলে দিই। শনিবারে আমাদের গড়ে আয় হয় ৮শত টাকার মতো।

কাপ্তাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান আহমেদ জানান, এখন চলছে মৌসুমী ফলের সিজন। বিশেষ করে পাহাড়ের উৎপাদিত এই সব ফল যেমন পুষ্টিগুণ আছে, তেমনি বিষমুক্তও। যার ফলে এর চাহিদাও বেশ।

আরও পড়ুন