জুমের ফসলে সুদিন ফিরেছে সংসারে

NewsDetails_01

রাঙামাটি সদরের পাহাড়ী এলাকা মগবান ইউনিয়নের বরাদমের গোলাছড়ি গ্রামের দরিদ্র কৃষক দম্পতি শীলাব্রত চাকমা ও মিনু চাকমা। বছর দুয়েক আগেও অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালাতেন। সে সংসারে ছেলেমেয়ের পড়ালেখা ও নিত্যদিনের খরচ মেটাতে কষ্টসাধ্য হয়ে উঠতো এই দম্পতির। তবে ভেঙ্গে পড়তেন না, আশায় থাকতেন, সুদিন আসবেই।

অবশেষে সুদিন ফিরেছে কৃষক শীলাব্রত চাকমার পরিবারে। অন্য একজনের মালিকানাধীন পাহাড়ী জমি দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে সেখানেই জুম চাষ শুরু করেন তিনি। আউস-বোরো ধানের পাশাপাশি বেগুন, কুমড়ো, বরবটিসহ নানান পদের শাকসবজ্বির চাষ করেন। স্ত্রী মিনু চাকমাকে নিয়ে দিনের পর দিন পাহাড়ের উচু নীচু জমিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ফসল ফলান। উৎপাদিত এসব ফসল বিক্রি করে ছয় সদস্যের সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়েছেন, মেয়ে বিয়ে দিলেন, ছেলেদের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছেন।
শীলাব্রত চাকমা জানান, অনেক বছর অন্যের জমিতে টাকার বিনিময়ে কাজ করেছি। সংসারে নিত্যদিন টানাপোড়েন ছিল। পরে একজনের ৮০ শতক জায়গা দেখাশোনার বিনিময়ে চাষাবাদ শুরু করি। স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতা ও পরামর্শে ধান রোপনের পাশাপাশি মৌসুমি সবজ্বি চাষ করি। উৎপাদিত এসব পণ্য বাজারে বিক্রি করে ভাল হচ্ছে। এখন অনেক খুশি। টানাটানি নেই। ছেলেমেয়েদের ভাল রাখতে পেরেছি, এটাই শান্তি।

NewsDetails_03

শীলাব্রতকে কৃষি কাজে সহযোগিতা করেন তার স্ত্রী মিনু চাকমা। বসতবাড়ি থেকে প্রায় ঘন্টাখানেক এর পথ মাড়িয়ে ভোরবেলায় স্বামীর সাথে পাহাড়ী জমিতে চলে আসেন। সারাদিন লেগে থাকেন কৃষি কাজে। দুপুরে ছোট্ট মাচাংঘরে বিশ্রাম নেন এবং আহার সারেন। সংসারে সচ্ছলতার জন্য স্বামীকে সহযোগিতা করে আত্মতৃপ্তি পান মিনু। তিনি জানান, একসময় অভাবে ছেলেমেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে ছিলাম, এখন ভাল আছি, সুখে আছি।

রাঙামাটি সদরের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার চাকমা জানান, প্রণোদনার অংশ হিসেবে আমরা কৃষি বিভাগ থেকে বীজ ও সার দিয়ে সহায়তা করেছি। শীলাব্রত একজন পরিশ্রমী কৃষক। প্রায় ৮০ শতক জমিতে চাষাবাদ করে তিনি এখন সাবলম্বী হয়েছেন। কেউ যদি পাহাড়ী পতিত জমি চাষাবাদের উদ্যোগ নেন, তাহলে কৃষি বিভাগ থেকে সর্বাত্বক সহযোগিতা করা হবে।

আরও পড়ুন