থানচিতে পাহাড় কাটছে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ভাই থোয়াইপ্রু অং

সাংবাদিক- তাংবাদিক ভয় পাওয়ার কিছুই নাই

NewsDetails_01

বান্দরবানে থানচি উপজেলা সদরে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবাধে পাহাড় কেটে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড রেস্ট হাউজের নির্মানাধীন সীমানা প্রাচীরের গর্তে মাটি ভরাট করা হচ্ছে। আর এই অভিযোগ থানচি উপজেলা পরিষদ চেয়াারম্যান এর ভাই থোয়াইপ্রু অং মারমা’র বিরুদ্ধে।

আজ মঙ্গলবার ২৫ জুলাই সকাল ৬টা থেকে মাটি কেটে ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী একটি মহল। এই বিষয়ে প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পাহাড় কাটার ফলে পাহাড়ের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রায় ২২ লক্ষ টাকার ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় থানচি রেস্ট হাউজ রক্ষনাবেক্ষনের সীমানা প্রাচীর নির্মান বাস্তবায়ন কাজের মাটি ভরাটসহ ওয়ার্ক অর্ডার পেয়েছেন স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান ছোট ভাই থোয়াইপ্রুঅং মারমা।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক সীমানা প্রাচীর কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে গত জুন মাসের ঢালাই কাজের সিমেন্টের চেয়ে ইটের কংক্রিট ও বালি বেশি হওয়ার কারনে নিন্মমানের কাজ করেছে বলে অভিযোগ উঠে। সেখানে আজ মঙ্গলবার ২৫ জুলাই সকাল থেকে পাহাড় থেকে মাটি কেটে মাটি ভরাটের কাজ করছিল।

খবর পেয়ে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত দিন-দুপুরে চলছে পাহাড় কাটা। এই ঠিকাদারের বড় ভাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, আর সেই ক্ষমতা দাপটে অবাধে পাহাড় কাটছে তারই ছোট ভাই থোয়াইপ্রুঅং মারমা। ভারী স্কেভেটর ১টি ও ট্রাক গাড়ি ২টি দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড রেস্ট হাউজের নির্মানাধীন সীমানা প্রাচীরের গর্তে মাটি ভরাট করা হচ্ছে।

সাংবাদিকদের সামনে ঠিকাদার থোয়াইপ্রু অং মারমা পাহাড় কাটায় নিয়োজিত শ্রমিকদের উদেশ্য করে বলেন, সাংবাদিক তাংবাদিক ভয় পাওয়ার কিছুই নাই, কাজ কর, কাজ না করলে বেতন পাবেনা। এ রকমের শতাধিক সাংবাদিক পকেটে রেখে কাজ করছি।

NewsDetails_03

স্কেভেটর চালক ফারুক ও ট্রাক চালক রাশেল সাংবাদিকদের জানান, আমরা পেটের দায়ে কাজ করেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান ছোট ভাই এর নির্দেশে আমরা কাজ করেছি। এর আগে কোরবানি ঈদের আগেও আমরা কাজ করেছি।

উপজেলা সদর হতে এক কিলোমিটার দক্ষিন-পশ্চিমে থানচি সদর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে মরিয়ম পাড়া প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী হিসাব রক্ষক সুরেন্দ্র ত্রিপুরা এর মালিকানাধীন পাহাড় থেকে কাটা হচ্ছে মাটি বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওয়ার্ড মেম্বার ডেভিট ত্রিপুরা।

এই ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটে প্রকল্প তদারকি কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এরশাদ হোসেন বলেন, উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে সীমানা প্রাচীর নির্মান হচ্ছে, সেখানে মাটি ভরাট আছে প্রায় ১০ লক্ষাধিক ঘনফুট মাটি লাগবে। ঠিকাদার চেয়ারম্যানের ছোট ভাই তিনি কাজটা করার কথা রয়েছে, কিন্তু অবৈধ পন্থায় পাহাড় কেটে মাটি ভরাট করলে আইন অমান্য করার শামিল।

এই ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে বান্দরবান ইউনিটে নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইয়াছির আরফাত একাধিকবার ফোন করা হলে ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ইমদাদুল হক বলেন, আপনারা এলাকার মানুষ আমারও সীমাবদ্ধতা আছে, সব কিছু করতে চাইলেও করা যায় না।

বান্দরবান জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি এখন অফিসের কাজে ঢাকায় অবস্থান করছি। পাহাড় কাটার জন্য আমাদের অধিদপ্তর হতে কাউকে পাহাড় কাটার অনুমোদন দেয়া হয়নি। এ বিষয়ের সরকারী ভাবে কড়া নির্দেশ রয়েছে, তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করা হবে। প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধের যথাযথ মামলাসহ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

আরও পড়ুন