ফুল ভাসিয়ে তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু উৎসব শুরু

NewsDetails_01

সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে বান্দরবানে শুরু হয়েছে তঞ্চঙ্গ্যাদের তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বিষু উৎসব। বিষু উৎসবে ফুলবিষু, মূলবিষু ও নয়া বছর মোট তিন দিন পালন করে থাকে তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী।

শুক্রবার সকালে বান্দরবানের সাঙ্গু নদীর তীরে ঐহিত্যবাহী পোশাকে সেজে পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা নদীতে ফুল ভাসান । এই দিনে সবার মঙ্গল কামনায় কলাপাতায় করে ভক্তি শ্রদ্ধাভরে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানি ভুলে নতুন বছরের শুভ কামনা করা হয় ।

এ সময় ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে সাঙ্গু নদীর তীরে ফুল ভাসাতে শতশত তঞ্চঙ্গ্যা শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ভিড় জমায়।

NewsDetails_03

আয়োজকরা জানান, ফুল বিষুর দিন বনজ ফুল লতাপাতা দিয়ে ঘরদোর সাজিয়ে ছিমছাম করে রাখে প্রত্যেক তঞ্চঙ্গ্যা পরিবার। সকালে কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতীরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে নদীতে ফুল ভাসিয়ে দেয় মা গঙ্গার উদ্দেশ্যে । সকলের বিশ্বাস মা গঙ্গা নাকি এতে সন্তুষ্ট হয় এবং সারা বছর আশীর্বাদ করে থাকে । আর মূল বিষুতে পরিবারে রসমলাইয়ের ন্যায় বিনি চাউলের গুঁড়ি দিয়ে মু-পিঠা তৈরি করে পরিবেশন করা হয় । শেষ দিন সমগ্র জাতির শান্তি সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামানোর লক্ষ্যে বৌদ্ধ বিহারে প্রার্থনায় মিলিত হন তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী ।

সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসাতে আসা কেতি তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠেই বাড়ি সাজাই আর নদীতে ফুল ভাসানোর জন্য ফুল সংগ্রহ করি । আর ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে আমরা পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে গ্রহণ করি ।

ঘিলা খেলায় আসা রোয়ংছড়ি উপজেলার ওয়াইগাই পাড়ার প্রীতি তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, এক ধরনের লতার বীজ নিয়ে আমরা ঘিলা খেলা খেলে থাকি। পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীরা এই খেলা খেলতে আসে। এই খেলাকে আমরা মিলন মেলা বলে থাকি ।

বিষু উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব উজ্জল তঞ্চঙ্গ্যা জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সকালে নদীতে ফুল ভাসানো হয়েছে। আর আয়োজন করা হয়েছে ঘিলা খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের । এছাড়াও শনিবার সকালে নতুন বছরে পিঠা ও মিষ্টান্ন পরিবেশন এবং রোববার সন্ধ্যায় সমগ্র জাতির শান্তি সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামানোর লক্ষ্যে বৌদ্ধ বিহারে প্রার্থনার মাধ্যমে শেষ হবে বৈসাবি উৎসব ।

আরও পড়ুন