রুমায় হিজড়া সাজিয়ে টাকা তোলায় রোহিঙ্গা আটক

NewsDetails_01

আটকৃত মোহাম্মদ আলেম ওরফে রূপসী হিজড়া
বান্দরবানের রুমা উপজেলায় হিজড়া সাজিয়ে টাকা তোলার সময়এক রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। গতকাল শুক্রবার বিকালে রুমা সদরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটক ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আলেম(২২) ওরফে রূপসী হিজড়া। সে টেকনাফের কতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশ্রয়ে থাকা সদস্য বলে স্বীকার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, রুমা বাজার ও সদরঘাটসহ বিভিন্ন জায়গায় দোকানে দোকানে গিয়ে প্রায় দুই মাস ধরে চাঁদা তোলে। এসময় দোকানদারা ১০টাকা, ২০টাকা দিলেও বারবার চাঁদা তোলায় তার প্রতি সন্দেহ হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানালে হিজড়া নামধারী মোহাম্মদ আলেমকে আটক করা হয়।
মোহাম্মদ আলেম(২২) ওরফে রূপসী হিজড়া পাহাড়বার্তা‘কে বলেন, গত দুইমাস আগে এক দালালের মাধ্যমে ১২জন তাদের দলের সঙ্গে কেরানী হাটে মজুরি করতে আসে, দিনে খাওয়া বাদে ২শ টাকা হচ্ছেনা।
আলেম জানায় এসময় শ্যামলি নামে এক হিজড়ার সাথে পরিচয় হয়। তখন আমাকে বলে যে, তুমি (মো. আলেম) আমাদের হিজড়ার মত। তুমি হিজড়া হয়ে যাও। দোকানে দোকানে গিয়ে টাকা তুলবা। দিনে পাঁচ হাজার পাইলে দুই হাজার টাকা তুই পাবি, বাদবাকী আমাকে (শ্যামলি) বা আমার সমিতিকে দিবি। এ কথায় লোভ বশত হয়ে দল ছেড়ে নকল হিজড়ায় নিজেকে সাজিয়ে নিই। দোকানে দোকানে টাকা তুলতে গিয়ে দোকানদাররা নানা প্রশ্ন করে। শুদ্ধ বাংলা ভাষাগত সমস্যার কারণে টাকা খুব বেশি উঠাতে পারিনি। এতে হিজড়া দলের নেতারা রেগে আমার উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। ইট দিয়ে মারে, রড দিয়ে পিটিয়েছে বলে তার হাতে নানা স্থানে আঘাতের চিহৃ দেখায়। পরে আমাকে হিজড়া তানিয়ার মাধ্যমে দুই মাস আগে এখানে পাঠায়,থানচিতেও পাঠায়। আমার কোনো লাভ হয়না।
সে আরো জানায় আমি একবার পালাতে চেষ্টা করছিলাম। ধরা পড়ে যায়, প্রচুর মার খায়, বলার মত নয়। আমাকে বলে যে, তুমি পালাতে আবার চেষ্টা করলে তোমাকে ইয়াবাসহ পুলিশে ধরিয়ে দেবে, এ ভয়ে কোথাও যেতে পারছিনা।
হিজড়াদের সম্পর্কে এক প্রশ্নে আলেম জানায় বড় হিজড়াদের মধ্যে আমার মত আসল পুরুষও আছে। দুইজন বউ আছে, দুই-তিনটা বাচ্ছা আছে। আমি দেখেছি- ইয়াবাও তাদের অভাব নেই।
দক্ষিণ চট্টগ্রামের হিজড়া সমিতি নেতা সোনালি হিজড়া বলেন, এ আলেম কোনো হিজড়া নয়। সে হিজড়া নাম ধরে টাকা তুলে। আমরা আসহায় জাতি হিজড়া। এ লোক আমাদের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। বেনামে চাঁদা নেয়, তা আমরা কোনো ভাবে মানতে পারিনা। আমাদের নিয়মে তাকে শাস্তি দেব। পরে থানা পুলিশ মোহাম্মদ আলেম ওরফে রূপসী হিজড়াকে থানায় নিয়ে যায়। এতক্ষণে শুক্রবার সাড়ে পাঁচটার দিকে সদরঘাট এলাকায় এঘটনার কৌতুহলে লোকজনের ভীর জমায়।
রুমা থানার এস আই মোহাম্মদ খোরশেদ আজ শনিবার সকালে জানান প্রচলিত নিয়ম অনুসারে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে আটকৃত ব্যক্তিকে টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে।

আরও পড়ুন