রোয়াংছড়িতে ৪ সন্তান নিয়ে খ্রিস্টান হোস্টেল থেকে উধাও কেএনএফ নেতার স্ত্রী

NewsDetails_01

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় সন্ত্রাসী গ্রুপ কেএনএফ সদস্যদের ভয়ে প্রত্যন্ত এলাকার থেকে পালিয়ে এসে সিওসি বম হোস্টেলে আশ্রয় নেওয়া এক মহিলা মেসাংগী তংঞ্চঙ্গ্যা ওরফে জিরথান কিম বম কাউকে না জানিয়ে ৪ সন্তানকে নিয়ে গভীর রাতে পালিয়েছে বলে জানা গেছে। সকালে হোস্টেল সুপার রেবেকা বম তাদের খুঁজে না পেয়ে রোয়াংছড়ি থানায় সাধারণ ডায়রী করেন।

সূত্রে জানা যায়, মেসাংগী তংঞ্চঙ্গ্যা ওরফে জিরথান কিম বম প্রায় ১৮ বছর আগে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে বর্তমানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সক্রিয় সদস্য রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলা সাইজাম পাড়ার লাল রিন বম কারবারিকে বিয়ে করেন। তার স্বামী সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কেএনএফ এর একজন সক্রিয় সদস্য। বর্তমানে চলমান যৌথ অভিযান এবং জনসম্মুখে নিজের সন্ত্রাসী পরিচয় প্রকাশ পাওয়ায় জীবন বাঁচানোর তাগিদে স্বদেশ ত্যাগ করে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের মিজোরামে পালিয়ে যায়।

স্বামীর এমন কর্মকান্ডে কোন উপায় না দেখে নিরুপায় হয়ে কারবারীর স্ত্রী মেসাংগী তংঞ্চঙ্গ্যা ওরফে জিরথান কিম বম গত সোমবার (১২জুন) সন্ধ্যায় দিকে এক মেয়ে জেনেত বম (১১) এবং তিন ছেলে আতং বম (৭), জেনবী বম (৫) রয়েল চিং লিয়েন বম (৩) কে নিয়ে রোয়াংছড়ি সিওসি বম হোস্টেলে আশ্রয়ের জন্য আসেন। মেসাংগী তংঞ্চঙ্গ্যা ওরফে জিরথান কিম বমের আসার কথা শুনে স্থানীয়রা এসে সিওসি বম হোস্টেলে তাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। এক রাত থাকার পর হোস্টেল কর্তৃপক্ষ জানতে পারে যে, তিনি একজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কেএনএফ এর সক্রিয় সদস্যের স্ত্রী। জন সম্মুখে তার স্বামীর পরিচয়ের বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় (১৩ জুন) রাতে ৪ সন্তানকে নিয়ে জিরথান কিম বম হোস্টেলের কাউকে না জানিয়ে গভীর রাতে পালিয়ে যায়।

NewsDetails_03

নাম বলতে অনিচ্ছুক এব্যাপারে সিওসি বম হোস্টেলে অবস্থানরত ও স্থানীয়রা বলেন, ১৩ জুন রাতে প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আমরা জাগ্রত ছিলাম, এরপর যার যার স্থানে ঘুমিয়ে পড়ি। অতঃপর গত বুধবার (১৪ জুন) সকাল ঘুম থেকে উঠে ৪ সন্তানসহ জিরথান কিম বমকে হোস্টেলে আর কোথাও দেখা যায়নি।

এই বিষয়ে হোস্টেল সুপার রেবেকা বম বলেন, মেসাংগী তংঞ্চঙ্গ্যা ওরফে জিরথান কিম বম গত সোমবার (১২জুন) ৪ সন্তান সহ আমাদের হোস্টেলে রাত্রিযাপন করেছিল। পরদিনও স্বাভাবিক নিয়মে রাত্রিযাপনের উদ্দেশ্যে সকলে ঘুমাতে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি তারা হোস্টেলে নাই। কাউকে না বলে গভীর রাতে এভাবে পালিয়ে চলে যাবে এটা কখনো ভাবিনি। সকালে অনেক খোঁজা খুঁজি করে না পাওয়ায় থানায় জিডি করে রেখেছি।

১নং রোয়াংছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মেহ্লাঅং মারমা বলেন, এলাকার আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাসদস্যদের সাথে নিয়ে জনমানুষের জানমাল রক্ষার্থে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও পার্বত্য জেলা পরিষদসহ বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবেলা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে সম্মিলিত ভাবে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ভয়ে যারা রোয়াংছড়িতে পালিয়ে আসছে তাদের সবাইকে বিভিন্ন ভাবে সহায়তা প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন