থানচিতে সাংগ্রাই উৎসব শুরু

NewsDetails_03

মৈত্রীময় স্নিগ্ধ ছোঁয়ায় শান্তির বারতায় বয়ে আসুক নব বর্ষের শৈল্পিক শুভ্রতা। এই নতুন বছরকে বরণ করে নিতে পাহাড়ের গায়ে লেগেছে মাহা সাংগ্রাই পোয়ে’র আনন্দের বন্যা। আজ শুক্রবার বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বান্দরবানের থানচি উপজেলায় শুরু হয়েছে ৫দিন ব্যাপী মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব “সাংগ্রাই পোয়ে”। পাশাপাশি চাকমা, তংচংঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, খেয়াং, চাক এবং মুরং সম্প্রদায় বিজু, বৈসু ও চাংক্রান উৎসব পালন করছে।
“সাংগ্রাই-মা ঞি-ঞি ঞা-ঞা রি ক্যাজাই কা-পা-মে” মারমা গানের মন-মাতানো সুরে পাহাড়ের প্রতিটি পল্লীতে চলছে নানা বয়সী নারী-পুরুষের আনন্দ ও উচ্ছাস। পাহাড়ে বসবাসরত ১১টি নৃ গোষ্ঠির মধ্যে মারমা, মুরং, চাকমা, ত্রিপুরা, তংচংঙ্গ্যা পৃথক ভাবে নিজ সম্প্রদায়ের কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে বর্ষবরণ উৎসবটি উদযাপন করে আসছে আদিকাল থেকে। চাকমা, তংচংঙ্গ্যা, ত্রিপুরা এবং মুরং সম্প্রদায় বাংলা বর্ষবরনের আগে বিজু, বৈসু-বৈসুক এবং চাংক্রান হিসেবে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মহা আনন্দে উদযাপন করে থাকেন।
তবে পাহাড়ে ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ধরে রেখে মারমা সম্প্রদায় বর্ণাঢ্য নানা চোখ ধাঁধানো আয়োজনে বর্ষ বরণ অনুষ্ঠানটি মহাসমারোহে পালন করে থাকেন। মারমা সম্প্রদায়ের বর্ষ পঞ্জী হিসেবে ১৩৭৯ কে বিদায় জানিয়ে ১৩৮০ কে বরণ করে নিচ্ছেন। মৈত্রীময় পানি বর্ষনের মাধ্যমে অতীতের সকল দুঃখ, জরা, গ্লাণী, পাপ-পংখীলতা ধুয়ে মুছে সুখ সমৃদ্ধির প্রত্যাশা এবং অসা¤প্রদায়িক চেতনায় সম্প্রতির আগমনী বার্তা নিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নিচ্ছেন মারমা সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ।
৫দিনের মহা আয়োজনে রয়েছে শোভাযাত্রা, ম্যারাথন, বয়স্ক পুজা, বৌদ্ধ মূর্তি স্নান, হাজার বাতি প্রজ্জ্বলন, তৈলাক্ত বাঁশ আরোহন, রাতব্যাপী পিঠা তৈরীর উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফানুস উড়ানো এবং সর্ব শেষ মৈত্রীময় পানি বর্ষন অনুষ্ঠান। তবে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বৌদ্ধ বিহার গুলোতে ভিড় লেগে থাকে। নিজেকে পবিত্র করে রাখার জন্য শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল বয়সের নারী-পুরুষ ধর্ম দেশনা শুনতে ভীড় জমান বৌদ্ধ বিহার গুলোতে। এ সময় পিন্ড দান, বুদ্ধ পুজা, প্রদীপ পূজাসহ ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠান পালন করেন বৌদ্ধরা। বাংলা নববর্ষের নব দিগন্তে অহিংসার বাণী আর পাহাড়ীদের বর্ষ বরণ হোক শান্তির সুপ্রভাতে।

আরও পড়ুন