সুবীর নন্দী সিএমএইচে

NewsDetails_01

সংগীত শিল্পী সুবীর নন্দীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার রাতে সিলেট থেকে ঢাকা ফেরার পথে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে পরিবারের সদস্যরা রাত ১১টার দিকে তাকে সিএমএইচে নিয়ে যান।

পরে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা সুবীর নন্দীকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করেন বলে তার জামাতা রাজেশ শিকদার জানান।

তিনি বলেন, “বাবার অবস্থা বেশি ভালো নয়। চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। আমরা সবার কাছে আশীর্বাদ চাই।”

৬৬ বছর বয়সী সুবীর নন্দী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছেন। নিয়মিতভাবে তার ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছিল।

সংগীত অঙ্গনে চার দশকের ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই শিল্পী। সংগীতে অবদানের জন্য এ বছরই তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে সরকার।

১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় সুবীর নন্দীর জন্ম। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব কেটেছে চা বাগানে। পরিণত বয়সে গানের পাশাপাশি চাকরি করেছেন ব্যাংকে।

NewsDetails_03

প্রাইমারিতে পড়ার সময় মা পুতুল রানীর কাছে সংগীতের হাতেখড়ির পর ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন সুবীর নন্দী।সিলেট বেতারে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে।

এরপর ঢাকা রেডিওতে সুযোগ পান ১৯৭০ সালে। রেডিওতে তার প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান।

১৯৭৬ সালে আব্দুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্লেব্যাকে আসেন সুবীর । ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় আজিজুর রহমান অশিক্ষিত। সেই সিনেমায় সাবিনা ইয়াসমিন আর সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।

ধীরে ধীরে সুবীর নন্দীর দরদী কণ্ঠের রোমান্টিক আধুনিক গান ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে।এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি।

চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এই শিল্পী। চারবার পেয়েছেন বাচসাচ পুরস্কার।

সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘দিন যায় কথা থাকে’, আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আশা ছিল মনে মনে’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘বন্ধু তোর বরাত নিয়া’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছ’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কতো যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, একটা ছিল সোনার কইন্যা’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’ শ্রোতাদের হৃদয়ে অমর হয়ে আছে।

তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ বাজারে আসে ১৯৮১ সালে। ‘প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘ভালোবাসা কখনো মরে না’, সুরের ভুবনে, ‘গানের সুরে আমায় পাবে’ ছাড়াও ‘প্রণামাঞ্জলী’ নামে একটি ভক্তিমূলক গানের অ্যালবাম রয়েছে তার।

আরও পড়ুন