কারও কাঁধে ভোটের প্লাস্টিকের বাক্স. কারও হাতে …

NewsDetails_01

কারও কাঁধে ভোটের প্লাস্টিকের বাক্স। কারও হাতে ও কাঁধে নির্বাচন সরঞ্জাম, দলিল দস্তাবেজের বস্তা। আর অনেকের হাতে রয়েছে ফাইল। কেউ কেউ তার প্রতিবেশিদের চিল্লা-চিল্লি ডাকা ডাকি। মূলত যে যার মতো প্রস্তুতি নিচ্ছেন গন্তব্য পৌঁছার লক্ষ্য নিয়ে। সবাই কাটছে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রাক প্রস্তুতি ব্যস্থতার সময়ে আনন্দ উৎসবের আমেজ।

আজ শনিবার (৬ জানুয়ারী) সকাল ১০ টায় বান্দরবানের রুমা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় প্রাঙ্গনে এ দৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মংসিংঅং মারমা। তিনি প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন গালেঙ্গ্যা ইউনিয়নের দুর্গম পান্তলা হেডম্যান পাড়া সরকারী ভোট কেন্দ্রে। একই অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুতিমল প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন কালা পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে।

তারা জানান, দুর্গম এলাকায় দায়িত্বে পাওয়ায় সহকর্মীদের নিয়ে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে এসেছিলেন। সব সরঞ্জাম বুঝিয়ে নেয়া শেষ। এখন গন্তব্যে পৌঁছতে কিছু সময় নৌকায়, আর বাদবাকী পায়ে হাটতে হবে তার দলের ২২ জন সহকর্মী নিয়ে।

নির্বাচন কার্যালয় প্রাঙ্গনে ইউনিফর্ম পরিহিত আনসার ভিডিপি সদস্য। নারী এ সদস্যের নাম আচিংমা মারমা। তিনি বলেন, সকাল থেকে মানসিক ও শারিরীক প্রস্তুতি নিয়ে সহকর্মীদের সাথে বসে আছেন। তাদের গন্তব্য স্থান, পাইন্দু ইউনিয়নের দুর্গম নিয়াংখ্যং পাড়া ভোট কেন্দ্র। দায়িত্ব পালনে কোনো অসুবিধা হবেনা বলে মুসকি হেসে জানালেন এই তরুন আনসার ভিডিপি সদস্য আচিংমা মারমাসহ আরো অনেকে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তরুন কুমার চাকমা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করতে ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন সামগ্রী নিয়ে রওয়ানা দিয়েছেন- প্রিজাইডিং অফিসার ও ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী, আনসার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা।

NewsDetails_03

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আগামী ৭ জানুয়ারী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে- সকাল ৮টা থেকে। তাই শনিবার সকাল থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ও নির্বাচন সামগ্রী নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিজ নিজ ভোট কেন্দ্রে চলে যাচ্ছেন।

নির্বাচন কার্যালয় তথ্যের সূত্রমতে, রুমা উপজেলায় চারটি ইউনিয়নের ১৮ ভোট কেন্দ্রে ৪৮টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। সকল কেন্দ্রে ভোট গ্রহনকার্য সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে সম্পাদনের জন্য ১০% অতিরিক্তসহ ২০জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৫৩জন সহকারী ও ১০৬ জন মোট ১৭৯জনকে মনোনীত করা হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রুমা উপজেলায় নারী-পুরুষ এবার ২১হাজার ৮৫৮জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করার কথা। তার মধ্যে নতুন তালিকাভূক্ত পাঁচশতাংশ তরুন ভোটারেরা প্রথমবারের মতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তরুন কুমার চাকমা।

তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে অভ্যন্তরে শান্তি শৃঙ্খলা এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল সরঞ্জাম ও দলিল দস্তাবেজের আনা নেয়াসহ সার্বক্ষনিক নিশ্চিত করবে পুলিশ ও আনসার-ভিডিপি বাহিনী। এ কাজে প্রতি ভোটকেন্দ্রে পুলিশের একজন এসআই ও ১২জন আনসার-ভিডিপি নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন তরুন কুমার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠানের জন্য বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রের আইন শৃঙ্খলা কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না ঘটতে পারে,তা দেখভালের পুলিশ আনসার ও পুলিশ রয়েছে।

তাছাড়া রুমা উপজেলায় ১৮টি কেন্দ্রে নির্বাচন চলাকালে ছয় প্লাটুন বিজিবি’সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদানের জন্য দুইজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাচন চলাকালীন বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন বলে জানালেন, উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুল হক।

আরও পড়ুন