খাগড়াছড়িতে পর্যটক কেন্দ্র আর খাবার হোটেলে ভীড়

আবাসিক হোটেল-মোটেল খালি

NewsDetails_01

পাহাড়-ঝরনা-অরণ্য-বৃষ্টি আর মেঘের মিতালি একসাথে দেখার জন্য দারুন এক গন্তব্য খাগড়াছড়ি। তার ওপর এই জেলার ওপর দিয়ে যেতে হয়, বাংলাদেশের ভূ-স্বর্গ নামে খ্যাত রাঙামাটির সাজেক।

বিশেষ করে খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটন, যেখান থেকে দেখা যায় খাগড়াছড়ির পুরো শহরটাকে, দেখা যায় মনমুগ্ধকর আঁকা বাঁকা চেঙ্গী নদী। আরো কতকিছু। সবকিছুকে ছাপিয়ে পর্যটকদের অপার আকর্ষনে টানে বদলে যাওয়া আলুটিলা ও আলুটিলার ব্যতিক্রমী ব্রিজ। এছাড়াও রহস্যময় গুহা ও রিছাং ঝর্ণায় প্রাণ জুড়ে যায় পর্যটকদের।

শহরের অদূরে পার্বত্য জেলা পরিষদ পরিচালিত জেলা পরিষদ হটিকালচার পার্ক, ঝুলন্ত সেতু, নয়াভিরাম মায়াবিনী লেক পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এছাড়া খাগড়াছড়িতে দেখার মতো রয়েছে মায়বিনী লেক, হাতি মাথা পাহাড়, দেবতাপুকুর, তৈদু ছড়া ঝর্ণা, পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ও পানছড়ির অরণ্য কুঠির।

সাধারনত বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ঘেরা খাগড়াছড়িতে পর্যটকের দেখা মিললেও এবারের ঈদের এই লম্বা ছুটিতেও আশানুরুপ পর্যটকের দেখা নেই। খাগড়াছড়ির অধিকাংশ আবাসিক হোটেল-মোটেল খালি পড়ে আছে। তবে আবাসিক হোটেলগুলোতে তেমন ভিড় না থাকলেও খাবারের দোকান, রেস্তোরাঁ ও পর্যটনকেন্দ্র গুলোতে পর্যটকদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো।

পার্বত্য যানবাহন মালিক সমিতির সভাপতি নির্নিমেষ দেওয়ান বলেন, প্রতি বছর ঈদের ছুটিতে আমাদের লাইনের গাড়ি দুইশ থেকে তিনশটি পর্যটক নিয়ে যায়বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে। আর এ বছর সমিতির আওতাধীন ৫০টির বেশি গাড়ি চলাচল করছে না। এভাবে পর্যটক না আসলে গাড়ির মালিক এবং চালকেরা না খেয়ে থাকবে।

NewsDetails_03

খাগড়াছড়ি হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, খাগড়াছড়ি জেলায় ৫০টির অধিক আবাসিক হোটেল রয়েছে। অনেক হোটেল মোটেলে ৭০ শতাংশ বুকিং হয়নি। তবে হোটেল মোটেলগুলোর কক্ষ ফাঁকা পড়ে থাকলেও স্থানীয় পর্যটকদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা।

খাগড়াছড়ি শহরের রেস্তোরাঁ সিস্টেমের কর্মচারী আচিং মারমা বলেন, ঈদের ছুটিতে রেস্তোরাঁয় চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। এক পর্যায়ে খাবার শেষ হয়ে অনেকে খাবার না পেয়ে চলে গেছেন। তবে এরা অধিকাংশ স্থানীয়। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের টিকেট বিক্রেতাকোকোনাথ ত্রিপুরা বলেন, ঈদের দিন পর্যটক না আসলেও পরদিন হাজার জনের অধিক পর্যটক এসেছে।

ঈদের পরদিন শুক্রবার বিকেলে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে কথা হয় গুইমারা উপজেলার সাইফুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, এমনিতে পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়ানো হয় না। ঈদ উপলক্ষে দুইটি পিকআপ ভাড়া নিয়ে ২৩জন মিলে ঘুরতে এসেছি আলুটিলায়। বিশেষ করে মা-বাবা খুব খুশি আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র দেখে। তবে খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা এবং স্থানীয় পর্যটকদের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এদিকে খাগড়াছড়ি আলুটিলা পর্যটন স্পটে ট্যুরিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরন বড়ুয়া বলেন, পর্যটকেরা যাতে নিরাপদ ভাবে ঘুরতে পারেন সে ব্যবস্থা নিয়েছে টুরিস্ট ও জেলা পুলিশ।

খাগড়াছড়ি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহামুদা বেগম বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যটন কেন্দ্রগুলোয় ২৪ ঘন্টা পুলিশ মোতায়েন করাহয়েছে। পর্যটকরা যেন নিরাপদে ভ্রমন উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য পুলিশ সদস্যরা তৎপর।

আরও পড়ুন