নাইক্ষ্যংছড়িতে বিএনপি নেতার হামলায় আহত অনেকে

NewsDetails_01

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে সাবেক ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ, মাদক কারবারী হিসেবে পরিচিত শহিদুল্লাহ ও সেলিমের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম সানাউল্লাহ মাতব্বরের পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।

হামলায় একাধিক সদস্য আহত হয়েছে। আহতরা হলো, কলেজ ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইফতেখারুল আবরার, তার ফুফাতো ভাই আবু নাঈম, খালা ছেনুয়ারা বেগম। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা পুলিশ। গত শনিবার রাতে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের স্কুলপাড়া এলাকায় এই হামরা চালায় আবদুল্লাহ, শহিদুল্লাহ ও সেলিম এর নেতৃত্বে বহিরাগত ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা।

আহত পরিবারের সদস্য ও নাইক্ষ্যংছড়ি যুব মহিলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সানজিদা আক্তার রুনা জানান, গত কয়েকদিন ধরে তার পরিবারকে হুমকি দিয়ে আসছিল আবদুল্লাহ, শহিদুল্লাহ, সেলিম, জান্নাতুল ফেরদৌস গং। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে হামলা করে তারা।

তিনি আরো জানান, আবদুল্লাহর পিতা মরহুম আবদুল জলিল জীবিত অবস্থায় ২৭০নং নাইক্ষ্যংছড়ি মৌজার ৫২০নং হোল্ডিং এর জমি থেকে ২০শতক জমি ১৯৮৯ সালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের হলফনামা মূলে বিক্রি করে যান। কিন্তু আবদুল জলিলের মৃত্যুর পর তার ছেলে আবদুল্লাহ, সেলিম ও শহিদুল্লাহ’র লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ওই জমির উপর। তারা বেশ কয়েবার প্রকাশ্যে জমি দখল করতে এসে ব্যার্থ হয়।

NewsDetails_03

সর্বশেষ শনিবার রাতের আধারে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তাদের ক্রয়কৃত ও ভোগদখলীয় বসতবাড়ি দখল করে নেয় আবদুল্লাহ গং। এসময় তারা বাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র ও নগদ টাকা লুট করে নেয়। ঘটনার সময় তাদের সন্ত্রাসী কাজে বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ইফতেখার উল আবরার, উপজেলা যুব মহিলা লীগ সভাপতি ও সাংবাদিক সানজিদা আকতার রুনার উপর হামলা করে। এতে আবরারের হাত ভেঙ্গে যায়।

পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে ভর্তি করায়। প্রতিবেশী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আবদুল্লাহর পরিবারের সঙ্গে স্কুল পাড়া এলাকায় কোন পরিবারের সম্পর্ক নেই। তারা একেক সময় একেক পরিবারের সঙ্গে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় লিপ্ত হয়। এছাড়া মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকায় স্থানীয়রাও তাদের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে না।

সরেজমিনে স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাবেক ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ, তার ভাই সেলিম ও শহিদুল্লাহ দীর্ঘদিন মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পলাতক ছিল। সম্প্রতি বিএনপি আন্দোলনের নামে মাঠে সক্রিয় হলে তিন ভাই নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রকাশ্যে আসে। ইতিপূর্বে শহিদুল্লাহ মাদক ব্যবসার টাকায় বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করার সময় স্থানীয় আইন শৃংখলা বাহিনীর নজরে পড়ে।

ওই সময় আইন শৃংখলাবাহিনী ভবন নির্মাণে তার আয়ের উৎসের খবর নিলে সে পালিয়ে চট্টগ্রামে ভাড়া বাসায় আশ্রয় নেয়। সম্প্রতি নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাদককারবার বৃদ্ধি পেলে আবদুল্লাহ ও শহিদুল্লাহ পুনরায় মাদক পাচার কাজে সক্রিয় হয়ে উঠে। মাদক পাচার ও প্রশাসনের নজর থেকে বাঁচতে কয়েক সপ্তাহ ধরে নিজেকে গণমাধ্যমকর্মী পরিচয় দিচ্ছে আবদুল্লাহ।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ আবদুল মান্নান বলেন, হামলার ঘটনার বিষয়ে দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছিল। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা না হলে পরবর্তী অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তিনি।

আরও পড়ুন