বান্দরবানে অবৈধ পাথর উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধের নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক

NewsDetails_01

জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম
বান্দরবানের ৭টি উপজেলার ঝিড়ি,ঝর্ণা, ছড়া,খাল ও পাহাড় থেকে অবাধে অবৈধ পাথর উত্তোলন করার ফলে উপজেলাগুলোর বিভিন্ন এলাকায় জলধার শুকিয়ে পানির সংকট দেখা দেওয়ার কারনে স্থানীয় ও পরিবেশবাদীদের দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে অবৈধ পাথর উত্তোলন ও পরিবহণ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করলেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দাউদুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজেলার ঝিড়ি,ঝর্ণা, ছড়া,খাল থেকে অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন ও পরিবহন করছে মর্মে বিভিন্ন সূত্রে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। গত ৯জুন জেলার আইনশৃংখলা কমিটির সভায় এই সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে। এমতাবস্থায় বান্দরবানের ঝিড়ি,ঝর্ণা, ছড়া,খাল অবৈধ পাথর উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ করা হলো। গত ৯জুন জেলা প্রশাসনের এক স্বারক মূলে এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে জেলা পুলিশ সুপার, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, জেলার ৭ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা,সহকারী পরিচালক পরিবেশ অধিদপ্তর এর কর্মকর্তাকে পত্র পাঠানো হয়েছে।
গত ১৯ এপ্রিল বান্দরবানে অনুষ্ঠিত দুইদিনব্যাপী পার্বত্য নদী রক্ষা সম্মিলনে বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের সভাপতি মো:মনিরুল ইসলাম বলেন, বান্দরবানের ৪০০ ঝিড়ি ঝর্ণা নষ্ট হয়ে গেছে শুধু মাত্র পাথর উত্তোলনের ফলে। নদী থেকে পাথর উত্তোলন করার ফলে নদীগুলো আজ পানি শুন্য। নদী জীবিত থাকলেই আমাদের নিশ্বা:স থাকবে,আর নদী মরে গেলে আমাদের মরণ অণিবার্য্য।
বান্দরবান পার্বত্য জেলার সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদী এবং নদীর পার্শ্ববর্তী সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ঝরনা, ঝিরি ও ছড়া থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এবং বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এরপরও বান্দরবানে ৭টি উপজেলায় পাথর উত্তোলন করে অবৈধ ভাবে পাথর পাচার বন্ধ নেই।
২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেলা’র আইনজীবি মো: ইকবাল কবির (এ্যাডভোকেট, সুপ্রীমকোর্ট) স্বাক্ষরিত এক পত্রে বান্দরবান পার্বত্য জেলার রুমা উপজেলায় অননুমোদিত ও অপরিকল্পিত ভাবে ব্যাপক হারে পাথর উত্তোলন করার প্রেক্ষিতে প্রতিকার চেয়ে চার সচিবসহ ১১ জনকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছিলো বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
প্রসঙ্গত,অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন ও পাচারের অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক নাজনীন সুলতানা নিপা বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার পরিবেশ আইনে জেলার লামা উপজেলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে লামার ইয়াংছামুখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজেম উদ্দিন ও একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুজিবুর রহমানসহ ৩৭ জনের নামে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেন। তবে জেলার রুমা, আলীকদম,থানচি ও রোয়াংছড়িতে অবাধে অবৈধ পাথর উত্তোলন করা হলেও উত্তোলন বন্ধে কার্যকর কোন অভিযান নেই।

আরও পড়ুন