২ যুগ পরেও হয়নি ব্রিজ, সেতু কষ্টে ৬ গ্রামের মানুষ

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা

NewsDetails_01

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার ধলিয়া খালের ওপারেই মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর ও বড়ঝালাসহ ছয় গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। ওই এলাকায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৪টি মসজিদ একটি বৌদ্ধ মন্দির সহ বহু কৃষি জমি ও বিভিন্ন ফলদ, বনদ গাছ সমৃদ্ধ সম্ভাবনাময় অনেক ফসল ফলে। উৎপাদিত কৃষি পণ্য সাপ্তাহিক মাটিরাঙ্গা বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্য যথা সময়ে আনতে না পারার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া অসুস্থ ও গর্ভবতীদের চিকিৎসা সেবা এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ইতোপূর্বে ঝুঁকি নিয়ে ঝুলন্ত ব্রিজটি পার হওয়ার সময় ঘটেছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। তাছাড়া সময়তো রোগীকে হসপিটালের নিতে না পারায় খালের নিচেই মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

কাঠের তৈরির পাটাতন দিয়ে নির্মিত একটি নড়েবড়ে ঝুলন্ত সেতু রয়েছে। এ সেতুটিই ছিল গত দুই দশক ধরে এপারের সঙ্গে ওপারের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। বর্ষা এলেই খালের ওপারের বাসিন্দারা মাটিরাঙ্গার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এই খালের উপরে সেতু নির্মাণ প্রতিশ্রুতিতেই আটকে আছে দুই যুগের বেশি। ফলে দুর্ভোগ কমেনি এই এলাকার মানুষের। বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্নজনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কয়েক বছর আগে নিজেদের প্রচেষ্টায় নিজেরাই কাঠের ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের ছয় গ্রামের মানুষ। প্রবল বর্ষণে সেই কাঠের সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় ফের দুর্ভোগে পড়েন তারা। নিম্নআয়ের মানুষের জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে জনস্বার্থে সেতুটি নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।

২০২১ সালের গোড়ার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই খবর প্রকাশ পেলে সেতুটি নির্মাণে এগিয়ে আসে প্রশাসন। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অ.দা) মো. হেদায়েত উল্যাহকে দ্রুত এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিলে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন ও মাটিরাঙ্গা পৌরসভার যৌথ অর্থায়নে জনদুর্ভোগ লাঘবে কাঠের ঝুলন্ত সেতুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সেতুটি নির্মাণ শেষে ফের জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এতে দীর্ঘ ভোগান্তি লাঘব হয়েছিল পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের।

NewsDetails_03

এরই মধ্যে মাসের পর বছর পার হলেও সেতুটি আবার ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে গেছে। সোজা থাকা সেতুটি পার হতে গেলে নদীর ডেউয়ের মতো আগাগোড়া ডেউ খেলে যায়। যদি কেহ হোঁচট খেয়ে নিচে পড়ে যায় তখন তার বেঁচে থাকার আশা হবে নিরাশা মাত্র। এভাবে চলতে থাকলে যেকোন সময় ঘট‌তে পা‌রে বড় ধর‌ণের দুর্ঘটনা

মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মিজানুর রহমান খোকন বলেন, বছর জুড়ে ধলিয়া খালে পানি থাকে। ফলে ভোগান্তি মানুষের পিছু ছাড়ে না। জনদুর্ভোগ লাঘবে ধলিয়া খালের ওপর পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. সামছুল হক বলেন, সেতুটি নির্মানের বিষয়ে আমরা গত ২৬ শে ফেব্রুয়ারী এমপির ডিউ লেটার সহ চিফ ইন্জিনিয়ার বরাবর একটি আবেদন পাঠানো হয়েছে। পৌরসভার এমন অর্থ নাই ধলিয়া খালের উপর একটি ব্রিজ নির্মাণ করার। দুর্ভোগ লাগবে দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ করার দাবি জানান তিনি।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ধলিয়া খালের ওপারে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। তাদের নিজেদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য থেকে শুরু করে যাতায়াত ব্যবস্থার সুবাদে ব্রিজটি নির্মাণ করে জরুরি হয়ে পড়ছে।

আরও পড়ুন