উপহারের ঘর পেলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী ফিরোজ
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার পাকাঘর পেয়ে খুশি খাগড়াছড়ি মাটিরাঙ্গা উপজেলার শারীরিক প্রতিবন্ধী ফিরোজ আলম। সে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এ আওতায় একটি পাকা ঘর পেয়েছেন।
এক সময় খাবার হোটেলে কাজ করতেন ফিরোজ আলম। নিজের স্ত্রী পরিবার নিয়ে কেটে যায় তাদের সুখের জীবন কিন্তুু একটি সড়ক দূর্ঘটনায় তার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।
দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে শারিরীকভাবে সুস্থ হলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি সে। তার একটি পা অকেজো হয়ে যায়। চিকিৎসার অভাবে অন্য পা পচন ধরেছে। তীলে তীলে কষ্ট পাচ্ছে সে। এরপর তার জীবনে নেমে আসে দু:খ, কষ্ট আর অবহেলা। বাদ্য হয়ে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন তিনি।
এক যুগেরও বেশী সময় ধরে ভিক্ষা করে সংসার চলে প্রতিবন্ধী ফিরোজের। নিজের মাথা গোজার কোনো ঠাঁই ছিল না। কখনো ভাড়া বাড়িতে আবার কখনো মানুষের দুয়ারে স্ত্রী-সন্তানসহ বহুরাত কেটেছে তার।
বলছিলাম মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের হাতিয়া পাড়ার বাসিন্দা ফিরোজ আলমের কথা। স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে তার সংসার। এক ছেলে প্রতিবন্ধী অপরজন অসুস্থ।
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় নতুন ঘর পেয়েছেন তিনি। ঘর পাওয়ারপর স্ত্রী।ও ছেলেদের নিয়ে নতুন ভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
চার সদস্যের পেট চালানোই যেখানে দায় সেখানে মাথা গোজার ঠাঁই প্রতিবন্ধী ফিরোজ আলমের কাছে আকাশ কুসুম কল্পনা ছাড়া আর কি হতে পারে? প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে দুই শতক জমিসহ সরকারি সেমিপাকা ঘর পেয়ে আকাশ কুসুম কল্পনাই সত্যি হয়ে ধরা দিয়েছে তার কাছে।
সম্প্রতি কথা হয় ফিরোজ আলমের সাথে। পাকা ঘর পেয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কেমন আছে জানতে চাইলে তিনি তৃপ্তির হাসি হেসে বলেন, এ ঘর আমার কাছে স্বপ্নের মতো। পেটে কিছু পড়ুক বা না পড়ুক এখন আর ঝড়-বৃষ্টিতে ভিজতে হবেনা। দিন শেষে মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে। এখন আর অন্যের বাড়িতে থাকতে হবে না।
অন্যের আশ্রয়ে থাকা ফিরোজ দুই শতক জমিসহ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সেমিপাকা ঘর তার একটি স্থায়ী ঠিকানা গড়ে দেয়ায় আল্লাহর দরবারে দু‘হাত তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মাটিরাঙ্গার ইউএনও মিজ তৃলা দেবের জন্য দোয়া করেন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইশতিয়াক আহম্মেদ বলেন, মাটিরাঙ্গায় এ পর্যন্ত ৪শ ৬৯টি গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের সেমিপাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবন্ধী ফিরোজ আলম তাদেরই একজন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিজ তৃলা দেব বলেন,আশ্রয়ন-২ প্রকল্প ছিল বলেই প্রতিবন্ধী ফিরোজ আলমের স্থায়ী ঠিকানা হয়েছে। ফিরোজের মতো আরো অনেকেরই স্বপ্নের ঠিকানা হয়েছে আশ্রয়ন প্রকল্পে। তার পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য ইতিমধ্যে ছাগল পালনের জন্য বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও তার প্রতিবন্ধী ছেলেকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনার কাজ চলছে।