কর্মকর্তার অভাবে গত তিনমাস ধরে বান্দরবানের সঞ্চয় অফিসের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শুধু রবিবার আর সোমবার কর্মদিবস পালন করলে ও সপ্তাহের বাকী দিনগুলোতে অফিসের কার্যক্রম থাকে কার্যত বন্ধ। এর ফলে সঞ্চয় অফিসের গ্রাহকদের পড়তে হচ্ছে চরম বিড়ম্বনায় ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান শহরের বাজার এলাকায় অবস্থিত জেলা সঞ্চয় অফিস ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতিষ্ঠার পর হতে বিভিন্ন সঞ্চয় কার্যক্রম পরিচালনা করলেও বর্তমানে একজন অফিস সহায়ক চালাচ্ছে পুরো অফিস। সহকারি পরিচালকের একটি পদ থাকলে ও গত তিন মাস যাবৎ পদটি খালি রয়েছে ,বর্তমানে রাঙ্গামাটি থেকে ডেপুটেশনে এসে একজন সহকারি পরিচালক চালাচ্ছে এই অফিসের কার্যক্রম।
আরো জানা গেছে, সপ্তাহের প্রথম দুইদিন অফিস চললেও মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতিবার অফিসের কোন কার্যক্রমই চলেই না, আর এর ফলে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয় সঞ্চয় অফিসের গ্রাহকদের।
সঞ্চয় অফিসের গ্রাহক দুলাল দাশ জানান,অফিসে পেনশন সঞ্চয়পত্র কিনেন তিনি, কিন্তু মুনাফা উত্তোলনের জন্য আসলেও সপ্তাহে ২টি দিন নির্ধারিত করার করনে উপচেপড়া ভীর থাকে।
স্থানীয়রা জানান, বান্দরবান শহরের সঞ্চয় অফিসটি গ্রাহকবান্ধব নয়। অফিসটিতে উঠার জন্য যে সিঁড়ি আছে সেটি খুব চিপা সিঁড়ি হওয়ার কারনে অফিসে উঠতে বেশ বেকায়দায় পড়তে হয় বৃদ্ধ পেনশনার গ্রাহকসহ অন্য গ্রাহকদের। বসার স্থান না থাকার কারনে ঠায় দাড়িয়ে থাকতে হয় অফিসটিতে।
তিন মাস অন্তর অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয় প্রকল্পের লভ্যাংশের নিতে আসা মিন্টু দাশ জানান, রবিবার ও সোমবারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়, সপ্তাহের অন্যান্য দিন এ¦ই অফিসের কার্যক্রম চলেই না।
অফিসের কার্যক্রম দিন দিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, গ্রাহকেরা নতুন নতুন প্রকল্প খুলতে চাইলেও কর্মকর্তা না থাকায় প্রায় সময়ই অফিসে এসে ফেরত চলে যেতে হয় দূর-দূরন্ত থেকে আসা অনেককেই, এতে একদিকে গ্রাহকদের ভোগান্তি হচ্ছে আর অন্যদিকে সরকার ও বিপুল অংকের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অফিসটির সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান জেলা সঞ্চয় অফিসে বর্তমানে ছয় হাজার গ্রাহকের বিভিন্ন প্রকার জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্প চালু রয়েছে আর প্রতিমাসেই এই কার্যালয়ে প্রায় ৫-৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়ে থাকে বলে জানা গেছে।
জেলা সঞ্চয় অফিসের সহকারি পরিচালক, অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক এই তিনটি পদ বিদ্যামান থাকলে ও বর্তমানে এখানে শুধু মাত্র রয়েছে একজন অফিস সহায়ক। তিনমাস যাবৎ সহকারি পরিচালক পদটি খালি রয়েছে , পাঁচ বছর ধরে খালি অফিস সহকারী , আর এর ফলে একজন অফিস সহায়ককে চালাতে হচ্ছে সম্পূর্ণ অফিস। খুলতে হচ্ছে তালা, করতে হচ্ছে নথিপত্র সংরক্ষণসহ সকল কাজ । আর এতে এক প্রকার বিশৃংখলায় পরিনত হয়েছে এই অফিসের সকল কার্যক্রম।
জেলা সঞ্চয় অফিসের অফিস সহায়ক মো: আবুল হান্নান চৌধুরী জানান, পিয়নের কাছ থেকে শুরু করে আমাকেই অফিসের সব কাজ করতে।
এদিকে দুই পার্বত্য জেলার সঞ্চয় অফিসের দায়িত্ব পালনকারী সহকারি পরিচালক মুহম্মদ জালাল উদ্দিন চৌধুরী জানান ,কর্র্মকর্তা সংকটের কারণেই এমটাই হচ্ছে , আশাকরি শীঘ্রই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বলে আশা করি।
ভুক্তভোগী সঞ্চয়ী গ্রাহকেরা মনে করেন , দ্রুত এই সমস্যা সমাধান করে বান্দরবান জেলা সঞ্চয় অফিসের জন্য একজন কর্র্মকর্তা ও অন্যান্য পদবীর জনবল নিয়োগ করে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি ও স্থানীয় গ্রাহকদের সেবার মান বাড়াতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ নজর দিবেন।