খাগড়াছড়ি জেলা সদরের দেওয়ান পাড়ায় গত ২৭ জুন এক গৃহবধুকে গণধর্ষণ ও ঘটনা প্রকাশে মৃত্যুর হুমকির প্রতিবাদে ও ধর্ষকদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে খাগড়াছড়ি সদরে ঝাড়ু মিছিল করেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
আজ মঙ্গলবার (৫ জুলাই ২০২২) সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজার থেকে ঝাড়ু মিছিলটি শুরু করা হয়। মিছিলটি জেলা পরিষদ, নারাঙহিয়া ও উপজেলা পরিষদ হয়ে চেঙ্গী স্কোয়ার পর্যন্ত যায়। পরে সেখান থেকে মিছিলটি পূনরায় স্বনির্ভরে এসে সেখানে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার আহ্বায়ক এন্টি চাকমার সভাপতিত্বে ও সদস্য রিমি চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন,হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা সহসভাপতি লিটন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা সাধারন সম্পাদক শান্ত চাকমা প্রমুখ। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য নারী সংঘের সাধারন সম্পাদক পরিনীতা চাকমা।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নীতি চাকমা বলেন, পাহাড়ের মানুষ একসময় ধর্ষণ শব্দের সাথে পরিচয় ছিলো না। পাহাড়ে এখন ধর্ষণ অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। দুষ্কৃতিকারীরা দুস্কর্ম করার পরও উপযুক্ত সাজা না হওয়া এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে পাহাড় অশান্ত হয়ে পড়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে হিল উইমেন্স ফেডারেশনে খাগড়াছড়ি জেলার আহ্বায়ক এন্টি চাকমা বলেন, জনজীবন অতীষ্টকারী মুখোশদের অত্যাচারে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। হুমকি, ভয় ও নিপীড়ন করে অতীতে দালালরা যেভাবে জনরোষের মুখে নিজেদের গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছিল ঠিক সেভাবেই এ নব্যমুখোশদেরও নারীসমাজের উত্থান তথা জনশক্তির উত্থাানের সম্মুখীন হতে হবে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অবিলম্বে ধর্ষণকারী মুখোশ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এবং ধর্ষকদের গ্রেফতার ও সাজা না হলে আগামীতে আরো জোরালো কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে ঘোষনা দেন।
উল্লেখ, গত ২৭ জুন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোন ছড়া ইউনিয়নেরদেওয়ান পাড়ায় নব্যমুখোশ সদস্য সাধু চাকমা, জেকসন চাকমা ও পিন্টু চাকমা কর্তৃক এক গৃহবধুকে পালাক্রমে ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন ও মৃত্যুরহুমকি দেওয়া হয়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিম খাগড়াছড়ি জেলা আদালতে মামলা দায়ের করলেও অভিযুক্তদের এখনো গ্রেফতার করা হয়নি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সদর হাসপাতালের আর এমও ডা. রিপল বাপ্পী চাকমা এবং সিভিল সার্জন ডা. সাবেরকে বেশ কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তাঁরা কল রিসিভ করেননি।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, ধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। দোষীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।