বাঙ্গালহালিয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধরের প্রতিবাদে আন্দোলন
মার্মা পার্টির ক্যাম্পে আগুন
সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে পাহাড়ের বাসিন্দারা। নির্ধারিত হারে চাঁদা না পেয়ে প্রবীণ ব্যবসায়িকে মারধর করার সময় উত্তেজিত জনতার হাতে দুই চাঁদাবাজ আগ্নেয়াস্ত্রসহ হাতেনাতে আটক হয়েছে। এসময় মার্মা পার্টির ক্যাম্পে আগুন দেওয়া হয়।
রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলাধীন বাঙ্গালহালিয়াতে আজ মঙ্গলবার বেলা ৮টার সময় এই ঘটনা ঘটে। বিক্ষুব্ধ উত্তেজিত জনতা পাহাড়ি সংগঠন এম.এন.পি’র সশস্ত্র ক্যাম্প আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে।
বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য এমদাদুল হক মিলন জানান, সকালে সন্ত্রাসী গ্রুপ এমএনপি’র কয়েকজন সশস্ত্র সদস্য বাজারের প্রবীন ব্যবসায়ি আজিজ সওদাগরের দোকানের সামনে একজন খুচরা ব্যবসায়িকে চাঁদা কম দেওয়ার অপরাধে মারধর করতে থাকে। এসময় প্রবীণ ব্যবসায়ি আজিজ উক্ত চাঁদাবাজদের বাঁধা দিলে চাঁদাবাজরা আজিজকে বেদড়ক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এতে করে স্থানীয় ব্যবসায়ি ও বাসিন্দারা এগিয়ে এসে এম.এন.পি’র সদস্যদের ঘিরে ফেলে উত্তম-মাধ্যম দিয়ে অস্ত্রসহ দুই সদস্যকে আটক করে।
উত্তেজিত জনতা বাঙ্গালহালিয়া বাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ রেখে বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে বাজারের পাশে অবস্থিত এম.এন.পি’র গ্রুপের ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাঙামাটির রিজিয়ন কমান্ডার, কাপ্তাই জোন কমান্ডারসহ সেনাবাহিনীর উদ্বর্তন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ি ও বিক্ষুব্ধ জনতার সাথে আলোচনায় মিলিত হন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর উদ্বর্তন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়িরা বেলা দুইটার পর থেকে দোকান-পাট খুলতে শুরু করেন।
এসময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ি নেতৃবৃন্দ জানান, প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৩ কোটি টাকার লেন দেন হওয়া ঐহিত্যবাহী বাঙ্গালহালিয়া বাজারটিতে বর্তমানে জেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদের পাশাপাশি উপজাতীয় সশস্ত্র সংগঠনের জন্য মোট চার দফায় চাঁদা আদায় করা হয়। কয়েকগুন বেশি হারে চাঁদা পরিশোধে বেহাল অবস্থায় অনেক ব্যবসায়ি ইতোমধ্যেই বাজারে আসা বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসায়িদের ত্রাহি অবস্থা।
তারপরও এমএনপি’র চাঁদা আদায় বন্ধ হচ্ছে না। বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়িদের নানান অভিযোগ শুনে নিরাপত্তাবাহিনীর উদ্বর্তন কর্মকর্তারা আঞ্চলিক দলের সন্ত্রাসীদের উৎখাতসহ কোনো চাঁদাবাজকে বাঙ্গালহালিয়া ও রাজস্থলী উপজেলায় অবস্থান নিতে দেওয়া হবেনা বলেও আশ্বাস প্রদান করেন।
এ সময় রিজিয়ন কমান্ডার আরো বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের সব জায়গাই সংস্কার করছে আমরা সেনাবাহিনী দেশ রক্ষার্থে বদ্ধপরিকর। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত। কোন সন্ত্রাসীকে এ রাজস্থলীতে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না তাদের প্রতিহত করবো।