বান্দরবানের ১৪১তম বোমাং রাজ পূন্যাহ হবে জানুয়ারিতে

বান্দরবানের বোমাং রাজা উ চ প্রু চৌধুরী
বান্দরবান পার্বত্য জেলার রাজকর আদায়ের উৎসব ১৪১তম রাজ পূন্যাহ মেলা প্রতিবছর ডিসেম্বরে আয়োজন করা হলেও এবছর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কারনে নতুন বছরের জানুয়ারী মাসের শেষ সপ্তাহে রাজপূন্যাহ মেলার আয়োজন করা হবে।
বোমাং রাজ পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান শহরের স্থানীয় রাজার মাঠে প্রতিবছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তিন দিনব্যাপি মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে, কিন্তু এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উত্তাপ থাকার কারনে মেলা আয়োজন পেছানোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। প্রতিবছর মেলাকে ঘিরে জেলার ১১টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য মন্ডিত মনোজ্ঞ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এ সময় পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মিলন মেলা পরিণত হয়, দেশি- বিদেশী পর্যটকরা ভীর জমায় পর্যটন শহর বান্দরবানে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রবীণ নেতা হিসাবে বোমাং রাজার আর্শিবাদ পাওয়ার জন্য দুর্গম পাহাড়ী এলাকা থেকে পাহাড়ীরা রাজ দরবারে এসে ভীর জমান।
বোমাং রাজ পরিবার সূত্র আরো জানায়, বৃটিশ শাসন আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান,রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি তিন জেলাকে তিনটি সার্কেলে বিভক্ত করে খাজনা আদায় করা হতো। ১৮৬৬ সাল পর্যন্ত চাকমা রাজা পার্বত্য এলাকা শাসন করতো। ১৮৬৭ সালে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ অঞ্চলের মারমা অধ্যুষিত এলাকাকে বোমাং সার্কেল, ১৮৭০ সালে রামগড় ও মাইনি উপত্যকার এলাকাকে নিয়ে মং সার্কেল গঠিত হয়।
আরো জানা যায়, বর্তমানে রাঙ্গামাটিকে চাকমা সার্কেল, বান্দরবানকে বোমাং সার্কেল এবং খাগড়াছড়িকে মং সার্কেল হিসাবে গণ্য করা হয়। প্রায় ১৭৬৪ বর্গমাইল এলাকার বান্দরবানের ৯৫টি, রাঙামাটির রাজস্থলি ও কাপ্তাই উপজেলার ১৪টি মৌজা নিয়ে বান্দরবান বোমাং সার্কেল। দুইশত বছরের ঐতির্য্য অনুসারে বছরে একবার এই মেলা আয়োজন করা হয় বোমাং সার্কেলের পক্ষ থেকে।
বান্দরবানের বোমাং রাজা উ চ প্রু চৌধুরীর সহকারী অং ঝাই খ্যায়াং বলেন,একাদশ সংসদ নির্বাচনের কারনে ডিসেম্বরে এবার রাজ পূন্যাহ’র আয়োজন হবেনা, নতুন বছরের জানুয়ারীর শেষ সপ্তাহে আয়োজন করা হবে।
প্রসঙ্গত,বান্দরবানের রাজ পূন্যাহ মেলা জমজমাট ভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে প্রতিবছর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আর্থিক অনুদান প্রদান করে বোমাং রাজাকে, এবারও অনুদান দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন