জনতার বন্ধু মাহমুদা বেগম লাকী !

NewsDetails_01

দেশে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা যেখানে নারী জনপ্রতিনিধিদের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা সেখানে সকল বাঁধা বিপত্তি কাটিয়ে দিনরাত জনতার পাশে থেকে জনতার সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন মাহমুদা বেগম লাকী।

তিনি খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ১ নং মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ জেলায় ইতোপূর্বে কোন নারী ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হননি৷

গত বছর পাহাড়ি ঢলে ডুবে যায় দীঘিনালা উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো। বাদ যায়নি মেরুং ইউনিয়নও। বন্যায় পানিবন্ধী হয়ে যায় এ ইউনিয়নের প্রায় হাজারো পরিবার। এসময় কখনো শুকনো খাবার কিংবা খিচুড়ি রান্না করে ছুটে গিয়েছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে। হয়েছেন তাদের দুঃখের সঙ্গী। এ সময় থেকে গ্রামে গঞ্জে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছেন তিনি।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ছোট মেরুং এলাকার বাসিন্দা হাফিজা খাতুন জানান, দিন রাত এভাবে ইতোপূর্বে কোন চেয়ারম্যান বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ায়নি। একজন নারী হয়েও তার কাছে যেনো কোন ক্লান্তি নেই।

তার আরেকটি চমকপ্রদ উদ্যোগ ইতোমধ্যে উপজেলা জুড়ে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বেশ প্রশংসিতও হয়েছেন তিনি। তা হলো, মেরুং ইউনিয়নে কোন পরিবারে সন্তান ভূমিষ্ট হলে মিষ্টি ও ফুলহাতে শুভেচ্ছা জানাতে ছুটে যান তিনি। অবিভাবকদের পরামর্শ দেন নবাগত সন্তানের দ্রুত টিকা দেওয়ার পাশাপাশি ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করিয়ে নিতে।

NewsDetails_03

বড় মেরুং এলাকার নবজাতকের মা আকলিমা আক্তার জানান, আমরা ভাবিনি চেয়ারম্যান এভাবে মিষ্টি ও ফুল হাতে আমাদের সন্তানকে শুভেচ্ছা জানাতে আসবেন৷ এভাবে কেউ কখনোই আমাদের খোঁজখবর রাখেনি। তিনি আমাদের বিনামূল্যে টীকা ও দ্রুত জন্ম নিবন্ধন করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আমাদের সত্যিকারের বন্ধু।

এছাড়া এ ইউনিয়নের কোন বাসিন্দা মারা গেলেও ছুটে যান তিনি শোক জানাতে ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে। মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের পরামর্শ দেন দ্রুত মৃত্যু নিবন্ধন কাগজপত্র নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করতে৷ এছাড়াও কোন বাসিন্দা তার মৃত পিতা মাতার বাৎসরিক অনুষ্ঠান করতে না পারলে তিনি আর্থিক অনুদান দিয়ে তাদের পাশে থাকেন৷

মধ্য বোয়ালখালী এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান আপার সহযোগিতায় আমার পিতার বাৎসরিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছি৷ বর্তমান সময়ে এমন ঘটনা বিরল।

এদিকে গত বছরের জুলাই মাস থেকে সরকারের ১৫ বছরের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে এলাকায় এলাকায় গিয়ে করছেন গ্রাম পর্যায়ে উঠান বৈঠক। সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন প্রচার করার প্রশংসা কুড়াচ্ছেন রাজনৈতিক মহলেও৷

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, এভাবে কোন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরকারের উন্নয়ন প্রচারে এ উদ্যোগ নেয়নি। তার এমন উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।

১ নং মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদা বেগম লাকী জানান, দ্বায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন অত্র ইউনিয়নবাসীর মাঝে। এলাকার জনসাধারণের সুখে-দুখে পাশে থেকে তিনি এগিয়ে যেতে চান। দ্বায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় নানা বাঁধা বিপত্তি কিংবা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু সকল বাঁধা উপেক্ষা করে জনতার কল্যানে কাজ করে যাচ্ছেন। জনগণের কল্যানে সাধ্যমতো সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবেও বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন