বিপন্ন রেংমিটচা ভাষা টিকিয়ে রাখতে সেনাবাহিনী খুলল স্কুল

NewsDetails_01

“রেংমিটচ্য ভাষা” পার্বত্য চট্টগ্রাম ও মিয়ানমারের একটি ভাষা। এটি বর্তমানে সংকটাপন্ন-বিপন্ন একটি ভাষা।
বর্তমানে এই ভাষাভাষীর মানুষ মাত্র ছয় জন বেঁচে আছেন বাংলাদেশে। কালের বিবর্তনে এই ভাষা বিলুপ্তির পথে। বিলুপ্ত প্রায় রেংমিটচা ভাষা রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে সেনাবাহিনী। পাহাড়ে শিক্ষার উন্নয়ন, সেই সাথে রেংমিটচা ভাষা রক্ষায় বান্দরবানের আলীকদমের দুর্গম ক্রাংসি পাড়ায় একটি স্কুল করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। ঐই স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষায় পড়ানোর পাশাপাশি রেংমিটচা ভাষারও চর্চা হবে।

রোববার (১০ মার্চ) সকাল এগারোটা দিকে স্কুলটি উদ্বোধন ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবানের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নবাগত রিজয় কমান্ডর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মেহেদী হাসান, আলীকদমের জোনের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল শওকাতুল মোনায়েম ও আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ তবিদুর রহমান প্রমুখ।

জানা যায়, একুশে ফেব্রুয়ারি মহান মাতৃভাষা দিবসে পাহাড়ের বিলুপ্তপ্রায় রেংমিটচা ভাষা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি নজরে আসে সেনাবাহিনীর। আর এরপরই বিলুপ্তপ্রায় এ ভাষাটি রক্ষায় এগিয়ে আসে সেনাবাহিনী।

NewsDetails_03

আরো জানা যায়, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় এলাকাবাসীর জন্য ওয়ালটনের উদ্যোগে পানির ব্যবস্থাও করে দেয়া হয়। এছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে দেয়া হয় শিক্ষা সামগ্রী। বর্তমানে স্কুলটিতে এখন ৪০ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে, শিক্ষক রয়েছেন চারজন।

রিজিয়ন কমান্ডার জানান, সেনাবাহিনী পাহাড়ে জনসাধারণের নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি শিক্ষা স্বাস্থ্য সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে থাকে। এর অংশ হিসেবে দুর্গম এলাকায় শিক্ষার মান উন্নয়ন, সেই সাথে বিলুপ্তপ্রায় একটি ভাষা রক্ষায় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে।

স্থানীয়রা জানান, পাড়াটি বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা সদরের ৮ নং ওয়ার্ডে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বর্তমানে এই জনগোষ্ঠীর মাত্র ৬ জন এ ভাষায় কথা বলে। এদের সবারই বয়স ৬০ বছরের ওপরে। এদের মৃত্যু হলে এ ভাষাটিও বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা তাদের।

প্রসঙ্গত পাহাড়ের ম্রো সম্প্রদায়ের সাথে সংস্কৃতি ও বৈচিত্রে রেংমিটচাদের মিল থাকায় বর্তমানে তাদের ভাষা এখন বিলুপ্তির পথে। প্রান্তিক এই জনগোষ্ঠী নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে তথ্য উঠে আসে। ভাষাটি রক্ষায় এখন সেখানে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এতে করে বিলুপ্তপ্রায় এই ভাষাটি রক্ষা পাবে বলে আশা স্থানীয়দের।

আরও পড়ুন