লবিংয়ে তোড়জোড় ২ ডজন আওয়ামীলীগ প্রার্থীর : নিরব বিএনপি

NewsDetails_01

ছবি : উপজেলা নির্বাচন লগো ।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর বান্দরবানের লামা উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চাঙ্গা অবস্থানে। সংসদ নির্বাচনের পরপরই ঘোষণা হয় আগামী মার্চে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের। এ ঘোষণার পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। তাদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন পুরনো পরীক্ষিত প্রার্থীর পাশাপাশি কিছু নতুন মুখও। দলীয় প্রার্থী হিসেবে সবুজসংকেত পাওয়ার জন্য লবিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য এসব প্রার্থীরা। আবার প্রার্থীদের নিয়ে এলাকায় শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা।

এদিকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টার-ব্যানার সেঁটে প্রচার প্রচারণা চালিয়েও নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। সবমিলিয়ে বইছে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনী হাওয়া। তবে এ মুহূর্তে বিএনপির নেতাকর্মীরা নীরব ভূমিকা পালন করছেন। তাদের কেউই উপজেলা নির্বাচন নিয়ে মুখ খুলচ্ছেন না। কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি কোন দিকে যায়, সেদিকে নজর রাখছেন তারা।

সূত্র মতে, একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত লামা উপজেলা। জেলার সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ এ উপজেলায় বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় দুই লাখ। ইতিমধ্যে দলের ২৪জন নেতাকর্মী নির্বাচনে অংশ গ্রহণের লক্ষে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পর জমাও দিয়েছেন।

তারা হলেন- চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহাবুবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক বাথোয়াইচিং মার্মা ও আজিজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রফিক আহমদ চৌধুরী। ভাইস চেয়ারম্যান পদে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক বিজয় আইচ, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন সেলিম, শাখাওয়াত হোসেন, থোয়াইক্য মার্মা, যুবলীগের সভাপতি জাহেদ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কান্তি দাশ, পৌর যুবলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান সাইদ, রুপসীপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াতুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক বাছেত হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল হক চৌধুরী। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উনুসাং মার্মা, বৈশালী বড়–য়া, আজিজনগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুলসুমা বেগম, সরই মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী খালেদা বেগম, পৌর মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মিল্কি রানী দাশ, তাঁতী লীগ নেত্রী সুলতানা নাজমা ও সুমনা আক্তার জিন্নাত। এদিকে মো. আলমগীর নামের এক ব্যক্তিও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে চান। তিনি পৌরসভা এলাকার বাজার পাড়ার বাসিন্দা মৃত আবদুল গণির ছেলে। ইতিমধ্যে স্থানীয় কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্টের কনভেনশন হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীতা ঘোষনা দেন তিনি।

NewsDetails_03

উপজেলা ঘুরে জানা যায়, তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও সৎ ব্যক্তিকেই আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পেতে চান।

মনোনয়ন সংগ্রহকারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাথোয়াইচিং মার্মা বলেন, দল থেকে যাকেই মনোনয়ন দেবেন, তার হয়েই কাজ করব। একই কথা জানালেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তাজুল ইসলাম, মো. তৈয়ব আলী, জাহেদ উদ্দিন, বিজয় আইচ ও প্রদীপ কান্তি দাশসহ অন্য প্রার্থীরা। এদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আমির হোসেন বলেন, আপাতত আসন্ন উপজেলা নির্বাচন করার চিন্তা ভাবনা নেই। কোন নেতাকর্মী দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলে বহিস্কার করা হবে।

লামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একদিনের জন্যও মাঠ ছাড়িনি। নেতাকর্মীর পাশে থেকেছি। খেটে-খাওয়া সহজ-সরল মানুষদের জন্য কিছু করার অভিপ্রায় নিয়ে আমার রাজনীতিতে আসা। দীর্ঘদিন ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। ভবিষ্যতেও লামা মানুষের দু:খে সু:খে পাশে থাকবো।

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, স্থানীয় সরকারের মধ্যে উপজেলা পরিষদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগের মতো এত বিশাল দলে একাধিক প্রার্থী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে যারা দীর্ঘদিনের ত্যাগী, পরীক্ষিত ও জনপ্রিয় ব্যক্তি তাদেরকে দলের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা বরাবরে প্রার্থী তালিকা পাঠানো হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাচাই বাছাই করে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নামের তালিকা চুড়ান্তভাবে মনোনয়ন দিবেন।

আরও পড়ুন