লামায় খালের ভাঙ্গনে ২ বসতঘর, ৮ একর ফসলি জমি ও ব্রিজ বিলীন

NewsDetails_01

বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি খালের পানির স্রোত তীব্র আকার ধারণ করে। আর এ স্রোতের তীব্রতার কারণে খালপাড়ে অবস্থিত কয়েকটি পাড়া প্রতি বছর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। গত কয়েকদিনে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ২টি বসতভিটা, একটি ব্রিজ ও প্রায় ৮ একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। অল্পদিনের মধ্যে বসতঘর হারানোর ভয়ে আতংক ও চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছেন আরো ২০ পরিবার।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার জনবসতি গড়ে ওঠার প্রথম দিকে বগাইছড়ি খালের তীরবর্তী এলাকায় বসবাস শুরু করেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন। বর্তমানে খালের উভয় পাড়ে ১৫০ পরিবারের বসববাস। খালের নাব্যতা হ্রাসের কারণে এখন সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি বৃদ্ধি পায়। আর এতে পানির তোড়ে তীব্র ভাঙ্গনে বছর বছর সংকুচিত হচ্ছে এলাকার পরিধি। অব্যাহত ভাঙণের মুখে প্রতি বছর ধ্বংস হচ্ছে খালের তীরবর্তী বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। চলতি মৌসুমে আবারো টানা বর্ষণ হলে তলিয়ে যেতে পারে ২০টির মত বসতঘর ও কয়েক একর ফসলি জমি। শুধু তাই নয়, ডুলহাজারা-কমিউনিটি সেন্টার সড়কের উপর গত বছর নির্মিত একটি ব্রিজটিও এ খালের ভাঙ্গনের কবলে রয়েছে।

NewsDetails_03

এ বিষয়ে খালপাড়ের বাসিন্দা মঞ্জুর আলম ও আবদুছ সালাম জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণের ফলে বৃহস্পতিবার দুুপুরে দিকে হঠাৎ তাদের দুটি বসতঘর খালে বিলীন হয়ে যায়। আবারো টানা বর্ষণ হওয়ার সাথে সাথে বাকী ২টি ঘরও বিলীন হয়ে যাবে। এদিকে গত কয়েক দিনে ৪০ শতক ফসলি জমি খালে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান, খাল পাড়ের বাসিন্দা মো. মোমিন। তাছাড়া মোহাম্মদ সোলেমান জানায়, টানা বর্ষণ শুরু হলে তারা আতংকে থাকেন, কখন না খালের ভাঙ্গনে বসতঘর বিলীন হয়ে যায়।

বগাইছড়ি খাল ভাঙ্গনের সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসাইন মামুন বলেন, খালের ভাঙ্গনে চলতি বর্ষায় ২টি ঘরবাড়ি ও এর গত বছর একটি ব্রিজ খাল গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বর্তমানেও ২০টির মত বসতবাড়ি ভাঙ্গনের মুখে আছে। এলাকাটিকে রক্ষা করতে হলে বড় বাজেটের প্রয়োজন। ইউনিয়ন পরিষদের সামান্য বরাদ্দে সমস্যা সমাধান হবে না।

এদিকে এলাকাটি রক্ষায় ব্লক বাঁধ নির্মাণের জন্য পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মজুমদার জানায়, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন প্রায় শতবছর ধরে বগাইছড়ি এলাকায় বসবাস করে আসছে। কিন্তু বর্ষায় বগাইছড়ি খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে খাল ভাঙ্গনের কবলে পড়ে এলাকাটিতে বসবাসরত পরিবারগুলো। গত কয়েক বছরে একটি ব্রিজ, ২টি বসতঘর ও প্রায় ৮ একর জমি এ খালের ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন