লামায় চাঁদা না দেয়ায় সন্ত্রাসীদের আগুনে পুড়লো শিক্ষকের বসতঘর

NewsDetails_01

বান্দরবানের লামা উপজেলায় শসস্ত্র সন্ত্রাসীদের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে চাঁদা না দেয়ায় মো. খালেকুজ্জামান নামের এক প্রধান শিক্ষকের বসতঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার গভীর রাতে উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের হাফেজ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত খালেকুজ্জামান হাফেজ পাড়ার বাসিন্দা আবদুল লতিফের ছেলে ও মাতামুহুরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৩ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রাতে সাড়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে শিক্ষক খালেকুজ্জামানের বসত ঘরের দরজায় একটি উড়ো চিঠি রেখে যায় সন্ত্রাসীরা। এতে দাবীকৃত চাঁদা না দিলে পেট্রোল দিয়ে ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়াসহ আরো অন্যান্য ক্ষতি করার হুমকি, পুলিশকে জানালে আরো বেশি ক্ষতি হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি ০১৮৮৭৭৯০৯৭৪ নম্বরে ফোন দেয়ার জন্য বলে সন্ত্রাসীরা। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে চাঁদার টাকা না দেয়ায় সন্ত্রাসীরা শনিবার রাত ২টার দিকে বসত ঘরটিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে মুহুর্তের মধ্যে বসত ঘরটি সম্পুর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক খালেকুজ্জামান বলেন, সন্ত্রাসীদের উড়ো চিঠি পাওয়ার পর থানায় অবগত করেও বসতঘরটি রক্ষা করতে পারলাম না। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ার কারণে ঘরের কোন মালামাল রক্ষা করা যায়নি,এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।

NewsDetails_03

স্থানীয় বাসিন্দা মো. শাহ আলম ও চ থোয়াই মার্মা জানান, গত ১ মাসে গভীর রাতে ৩টি গ্রামের ১২টি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ সহ ২টি উড়ো চিঠির মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে সন্ত্রাসীদের তান্ডব ও অত্যাচারে নিদ্রাহীন রাত কাটাচ্ছে কয়েক গ্রামের মানুষ। একই পাড়ার বাসিন্দা উহ্লাচিং মার্মার ছেলে চনুমং মার্মার কাছেও উড়ো চিঠি দিয়ে দেড় লাখ টাকা চাঁদাও দাবী করে বলে জানান তারা।

রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা জানায়,স্থানীয় মাস্টার পাড়ার বাসিন্দা পাইংশৈ প্রু মার্মার ছেলে ছিং ছিং মার্মার নেতৃত্বে এসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য, হেডম্যান, কারবারীদের নিয়ে বৈঠক করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

সন্ত্রাসীদের দেয়া আগুনে বসতঘর ছাই হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. আমিনুল হক বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে,পাশাপাশি এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর হাফেজ পাড়া ও মাস্টার পাড়াসহ তিন গ্রামের মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। রাত জেগে বাড়ি ঘর পাহারা দিচ্ছে এলাকাবাসী। খবর পেয়ে রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অপ্পেলা রাজু নাহা প্রমুখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

আরও পড়ুন