করোনার এইসময়ে বান্দরবানে জমজমাট মেজবানের আয়োজন !

purabi burmese market

বিশ্বব্যাপি করোনা ভাইরাস সংক্রমন মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই করোনা সংক্রমন রোধে সরকার লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পড়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্যদিকে সরকারের এই পদক্ষেপকে ম্লান করে দিচ্ছে কিছু লোকের অসচেতনতার কারণে। সরকারের এই পদক্ষেপকে ম্লান করে দিতে এবার বান্দরবান সদর উপজেলা রাজবিলা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে মুসলিম পাড়ায় আয়োজন করা হয়েছে এক বিরাট মেজবানের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী রোববার ও সোমবার দুই দিনব্যাপি এই মেজবানে প্রায় এক হাজার লোকের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। মেজবানে জেলার অন্যান্য এলাকা ছাড়াও পাশ্ববর্তী চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, চন্দ্রঘোনা, শিলক থেকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। এতে করে করোনা সংক্রমন ছড়িয়ে পড়ার আশংকা প্রকাশ করছেন এলাকার স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা। তাই এইসময়ে মেজবানের মতো এমন আয়োজন বন্ধে প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা।

জানা গেছে, বান্দরবান সদর উপজেলা রাজবিলা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা মো: আবুল বশর (৬৫)। গত বুধবার বজ্রপাতে তিনি মারা যান। এর পরের দিন বৃহস্পতিবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে মারা যান আবুল বশরের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মোস্তফা খাতুন। তাই পরিবারের আত্বীয়-স্বজনেরা মারা যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে দুই দিনব্যাপি মেজবানের আয়োজন করেছেন। আগামী রোববার মৃত মো: আবুল বশরের উদ্দেশ্যে মেজবান দেয়া হবে। এর পরের দিন সোমবার আয়েশা বেগমের উদ্দেশ্যে মেজবানের আয়োজন করা হয়েছে।

মেজবানে পাশ^বর্তী চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া, চন্দ্রঘোনা, শিলক, বাঙ্গালখালিয়াসহ রাজবিলা ও বালাঘাটা এলাকার লোকজনদের দাওয়াত দেয়া হয়েছে। মেজবানে প্রায় এক হাজার লোকের খাবারের আয়োজন রয়েছে। তাই মেজবান উপলক্ষে গতকাল শনিবার প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে। রান্না-বান্নার জন্য গরু জবাইয়ের প্রস্তুতি চলছে।

মৃত আবুল বশরের বড় ছেলে মো: কাশেম বলেন, পরিবার ও আত্বীয়-স্বজনদের সিদ্ধান্তে কাল রোববার বাবা আবুল বশরের আত্বার শান্তির জন্য মেজবানের আয়োজন করা হয়েছে। পরের দিন সোমবার চাচী মোস্তফা খাতুনের জন্য মেজবানের আয়োজন রয়েছে।

dhaka tribune ad2

তিনি আরো বলেন, করোনার সময়ে মেজবান আয়োজন করতে গেলে প্রশাসনের অনুমতি লাগে তাঁর জানা নেই ।

৪ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মো: হাশেম জানান, করোনা ভাইরাস হলো সংক্রমন। একজন থেকে আরেকজনের কাছে ছড়ায়। মেজবানে আগত কোনো লোকের করোনা উপসর্গ অথবা করোনা পজিটিভ থাকলে সংক্রমন ছড়ানোর সম্ভাবনা আছে।

এছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো কয়েকজন জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে মেজবান দেয়া সোয়াবের কাজ। তবে করোনা ভাইরাসের সময়ে মেজবান দেয়াটা উচিত হয়নি। এছাড়া বর্তমানে চট্টগ্রাম হলো করোনা ভাইরাস সংক্রমণে রেড জোন এলাকা। পাশ^বর্তী রাঙ্গুনিয়া, চন্দ্রঘোনা, শিলক থেকে লোকজন যদি আসে আর তাদের যে কারো একজনের করোনা থাকে তাহলে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে এই এলাকার।

রাজবিলা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ক্য অং প্রু বলেন, সোমবারের মেজবানে আমাকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। মেজবানে প্রশাসনের অনুমতি আছে কিনা আমার জানা নেই।

এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলামের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।