খাগড়াছড়িতে প্রবল বর্ষণে মহাসড়ক বিধ্বস্ত

NewsDetails_01

খাগড়াছড়িতে প্রবল বর্ষণে মহাসড়ক বিধ্বস্ত
প্রবল বর্ষণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়ক সহ জেলার অধিকাংশ মহাসড়ক ও আভ্যন্তরীণ সড়ক। সড়কের পাশের মাটি ও পাহাড় ধসের পাশাপাশি বৃষ্টির পানিতে এসব সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যান চলাচল বিঘ্ন হচ্ছে। তবুও দূর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে এসব সড়কে প্রতিদিন চলাচল করছে শতশত যানবাহন।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথের তথ্যমতে, জেলার মহাসড়ক ও আভ্যন্তরীণ ১২টি সড়কের অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৬৩ কিলোমিটারে অন্তত ১০ টি পয়েন্টে ভয়াবহ ভূমি ধস হয়েছে। এতে করে যেকোন মূর্হুতেই সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভারী বর্ষণে পাহাড় ধস ও সড়কের ওপর পানি জমে থাকায় এ ঝুঁকি আরও বাড়েছে। বিকল্প সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যাত্রী ও পণ্যবাহী শতশত পরিবহন। শুধু খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়ক নয় খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি ও রামগড় সড়ক সহ জেলার ১২ টি মহাসড়ক ও আভ্যন্তরীণ সড়কের একই দশা। সঙ্কট সমাধানে দ্রুত সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ চান এসব সড়কে চলাচলকারীরা।
বাস চালক মো. ছগির মিয়া বলেন, পাহাড়ের খাদের সাথে লাগানো সড়ক দিয়ে গাড়ী চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। একটু অসর্তকতায় বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটে। তার উপর রাস্তার পাশের মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যাত্রী নিয়ে এসব রাস্তা দিয়ে গাড়ী চালানোর সময় ভয় করে।
কাভার্ডভ্যান চালক সেলিম উল্লাহ বলেন, পাহাড়ের বাঁকগুলোতে লেনে থেকে গাড়ি চালাতে হয়। যখন বৃষ্টি পড়ে তখন পাহাড়ের গা ঘেঁষে চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। এতদিন পাহাড় ধসের ঝুঁকি ছিল এখন নতুন করে সড়ক ধসে পড়ায় ভারী গাড়ী নিয়ে যাতায়াতে কষ্ট হচ্ছে।
থ্রী হুইলার চালক পঙ্কজ চাকমা বলেন, চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি সড়কে আগে দুইটি গাড়ি চলাচল করতে পারলেও যেসব স্থানে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে এসব জায়গায় গাড়ি চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। একটি গাড়ি পারাপারের সময় অন্য গাড়িকে দাড়িঁয়ে থাকতে হয়। এতে সময় ও ঝুঁকি দুইয়ে বেড়েছে।
খাগড়াছড়ির প্রবীণ ঠিকাদার তাপস ত্রিপুরা বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের পর পাহাড়ে ভূমি ধস ভয়াবহ হয়ে উঠে। গত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণ বন্ধ হলে সড়কের পাশে ভ‚মি ধস ও পাহাড় ভেঙ্গে পড়ার সঙ্কট আরও বাড়তে পারে। তাই জোড়াতালি দিয়ে সড়কগুলো মেরামত না করে স্থায়ী ও পরিকল্পনা মাফিক কাজ না করলে সামনের দিনে ভয়াবহ বিপর্যয় আসতে পারে।
খাগড়াছড়ি সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ভারী বর্ষণে সড়কের উপর দিয়ে পানি চলাচল করায় ভ‚মি ধস ও রাস্তার পাশ ভেঙ্গে খাগড়াছড়ির সবক’টি সড়কই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সওজ সড়ক যোগাযোগ যেন বন্ধ না হয় সেলক্ষ্যে জরুরী ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে দেশীয় পদ্ধতিতে বালির বস্তা, ত্রিপল ও বল্লি দিয়ে রক্ষার কাজ চলছে। বৃষ্টি শেষ হলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামতের কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া তিন পার্বত্য জেলায় টেকসই ও উন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে একটি প্রকল্প একনেকের অনুমতির অপেক্ষায় আছে।
উল্লেখ, ২০১৭ সালের ভয়াবহ পাহাড় ধসে খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কের দুইটি পয়েন্টে ভয়াবহ ভূমি ধসে ২১ দিন সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। প্রবল বর্ষণে সে সময়ও খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও জালিয়াপাড়া-রামগড় ঢাকা মহাসড়কেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

আরও পড়ুন