থানচিতে রাস্তা নির্মাণে ধীরগতি, জনদুর্ভোগ চরমে

গাফিলতিতে কাজ শেষ হচ্ছে না থানচি বাজার থেকে ছাংদাক পাড়া ও কলেজ যাওয়ার রাস্তার নির্মাণ কাজ। অথচ এ রাস্তা দিয় প্রতিদিন শত শত মানুষসহ ছোট-বড় অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। এ অবস্থায় সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠার পাশাপাশি মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাইতে হচ্ছে ।

রাস্তাটির দ্রুত নির্মাণ দেখতে চান এলাকাবাসী। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর জানিয়েছে, এ রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদারকে নোটিশ দেয়া হয়েছে । অন্যদিকে ঠিকাদার জানিয়েছে , বর্ষা এবং করোনা কারনে কাজ শেষ করতে সমস্যা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্র জানায়, গত ২০২০-২১ অর্থ বছরে জুলাই মাস ১ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ের থানচি বাজার থেকে টিএন্ডটি পাড়া হয়ে ছাংদাক পাড়া যাওয়ার রাস্তা ও বাস ষ্টেশন হতে ইউনিয়ন পরিষদ হয়ে কলেজ যাওয়ার রাস্তা পাকাকরণ কাজ বাস্তবায়নর জন্য দুটি প্যাকেজ দরপত্র আহবান করেন স্থানীয় সরকার প্রকোশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বাদরবান অফিস। কাজ গুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় বাদরবানের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউটিমং। এদিকে গত বছরের আগষ্ট মাস কাজটি বাস্তবায়নর জন্য কার্যাদেশ দেয় এলজিইডি। যেটি চলতি বছরের ৩০ ডিসেম্বর সমাপ্তি হওয়ার কথা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন। এখনও মাত্র ৫০ শতাংশ কাজ শেষ করছে না ঠিকাদার।

জানা যায়, মসার্স ইউটিংমং লাইসেন্স কাজটি করছেন চট্টগ্রামের আমিরাবাদের বাসিদা ঠিকাদার ফারুক আহম্মদ চৌধুরী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একই প্যাকেজের কয়েকটি অংশ বালু ফিলিং দিয়ে ইটের খোয়া ফলে কাজ ফেলে রেখে দিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। পুরোনো এইচবিবি রাস্তার ইট তুলে ফেলায় বৃস্টতে কাঁদায় একাকার হয়ে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে রাস্তা গুলো। এর মধ্যে প্রতিনিয়ত ওই রাস্তা দিয়ে ছোট-বড় যান চলাচল অব্যাহত থাকায় সড়ক দিয়ে পায়ে হঁটতে যাওয়াও কষ্টকর হয়ে পড়েছে । বিদ্যালয় পড়ুয়া কোমল মতি শিক্ষার্থীরা ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে অনেকে আহতও হয়েছে বলে অভিযাগ স্থানীয়দের ।

এছাড়াও সড়কর পাশ দিয় হঁট যাওয়ার সময় চলন্ত গাড়ির চাক্কার কাঁধা পানি ছিটকে পড়ে পথচারীদের বিড়ম্বনার যেন শেষ নেই । ফলে এ সড়কটি এলাকাবাসী ও পথচারীদের জন্য এক অভিশাপ বলে জানিযেছেন স্থানীয়রা।

ছাদাক পাড়ার বাসিদা জওয়াই প্রু মারমা জানান, এক বছর আগ রাস্তার কাজ ধরলেও এখনও শেষ হয়নি। পূর্বের এইচবিবি রাস্তার ইটগুলো তুলে ফেলার এভাবে কাজ ফেলে রাখা ঠিক হয়নি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগের পুরোনো রাস্তা অনেক ভালো ছিলো। জনগণকে এভাবে মাসের পর মাস ভোগান্তিতে ফেলে রাখার উন্নয়ন কাজ আমরা চাই না। এ সড়কটির জন্য এই এলাকার মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পোহাইতে হচ্ছে ।

টিএন্ডটি পাড়া বাসিদা আহম্মদ কবিরসহ কয়েকজন ব্যাবসায়ী জানান, এখন এ রাস্তাটি ভোগান্তির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িছে। এ রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে মোটরসাইকেল চালক ও পথচারীরা পড়ে অনেকেই আহত হয়েছে। এভাবে কাজ ফেলে রাখাএখন ঠিকাদারীর কান্না খোজ খবর নেই । প্রায় ৬ মাস অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত তিনি রাস্তাটি দখতে আসেননি বলে জানান তারা।

কাজ ফেলে রাখার ব্যাপার জানত চাইলে ঠিকাদার ফারুক আহম্মদ চৌধুরী বলেন , বৃষ্টির কারনে মালামাল পরিবহণ একটু সমস্যা হযেছিলো। তাই কাজটি বাস্তবায়ন করতে দেরি হচ্ছেে । খুব শিগ্রই কাজ ধরবেন বলে জানান তিনি।

উপজেলা প্রকোশলী নিজাম উদ্দিন বলেন, ৫০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা পরিদর্শণ করে কাজের অগ্রগতি দেখে ঠিকাদারকে ৭০ লাখ টাকা বিল দেয়ার জন্য জেলা অফিসকে সুপারিশ করছিলাম। তবে কত টাকা বিল দিযেছে সেটা আমরা জানিনা। অতি বষ্টির কারণ রাস্তার কয়েকটা জায়গায় খুব খারাপ অবস্থা। কাজটি দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদারকে নোটিশ দেয়া হয়েছে বল জানান তিনি।

স্থানীয় সরকার প্রকোল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জেলা সিনিয়র প্রকোশলী জামাল উদ্দিন বলেন, ঠিকাদারকে কত টাকার বিল দেয়া হয়েছে সেটা ঠিক মনে নেই। কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে আমরা নোটিশ দিয়েছিলাম। তাছাড়াও মূখিক ভাবে বেশ কয়েকবার বলা হয়েছে। তবে আগামি ডিসম্বরর আগে আমরা শতভাগ কাজ আদায় করতে পারবো বলে আশা করছি।

আরও পড়ুন