অপার সম্ভবনা থাকা স্বত্বেও শুধুমাত্র উদ্দ্যেগের অভাবে নামেই পর্যটনস্পট বান্দরবানের থানছি উপজেলার নাফাকুম (ঝর্না)। পর্যটকদের জন্য নুন্মতম সুযোগ-সুবিধা না থাকায় স্পটটি এখন পর্যটকদের জন্য মরনফাদে পরিনত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর জেলার দূর্গম থানছি উপজেলা সদর থেকে বোট যোগে যেতে হয় রেমাক্রি মুখ। নাফাকুমে যেতেই পড়বে রেমাক্রি মুখ, পাথরের ভাজে ভাজে প্রবাহিত পানির ঝর্না। আর এই জায়গা থেকে পাহাড় ও বন মাড়িয়ে একাধিকবার নদী পাড় হয়ে ১৩ কিঃ মিঃ হেটে যেতে হয় নাফাকুমে। ২৫-৩০ ফুট এই জলপ্রপাতটি রেমাক্রী হয়ে সাঙ্গু নদীতে মিলেছে যেখানে মিলনস্থলে প্রাকৃতিক ভাবেই কয়েকধাপ সিঁড়ির মত করে হেলে দুলে নৃত্যের ছন্দে সাঙ্গুতে মিশে গেছে।
আরো জানা গেছে, নাফাকুম ঝর্নার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর শীত মৌসুমে শত শত পর্যটক আসলেও অনুন্নত যাতায়ত, পর্যটকদের জন্য পর্যটন স্পটটিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর নিহত ও আহত হবার ঘটনা ঘটছে। গত চার বছরে নাফা কুমে পড়ে গিয়ে নিহত হয়ে তিন পর্যটক আর আহত হয়েছে কমপক্ষে দুই শতাধিক। পর্যটন মন্ত্রণালয় বা স্থানীয় প্রশাসন কোন কাজ করেনি পর্যটন কেন্দ্রটির উন্নয়নে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক তৌহিদুল আলম বলেন, প্রকৃতিক এই ঝর্নাটি পর্যটকদের জন্য খুব বিপদজনক, দ্রুত নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরী করা প্রয়োজন।
সরজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, পাথুরে পিচ্ছিল পর্যটনটিতে কেউ পড়ে গেলে তীব্র পানির স্রোতধারার কারনে তিনি কোন কিছু আকড়ে ধরে প্রান বাচাঁবেন তার উপায় নেই, পড়লেই তিনি চলে যাবে গভীর কুমে। ফলে মৃত্যু হাতে নিয়ে পর্যটকরা পর্যটনটির সৌন্দর্য উপভোগ করছে। থানছি থেকে রেমাক্রি মুখ পর্যন্ত সাঙ্গুনদী পথে বড় বড় পাথরের ফাক দিয়ে বোট চালকরা পর্যটকদের আনা-নেওয়া করলেও নাফা কুমে প্রতিনিয়ত পর্যটকরার দূর্ঘটনার শিকার হওয়াতে আশানুরুপ পর্যটক আসছেনা বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বোট চালক উজ্জল ত্রিপুরা বলেন, আমরা বোট চালিয়ে ভাত খায়, সরকার একটু সু-দৃষ্টি দিলে নাফাকুমে পর্যটক বাড়তো, এলাকাটির অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ হতো।
পর্যটকদের নাফাকুম যেতে হচ্ছে বন-জঙ্গল সাফ করে, পাহাড়ের বুকে হাঁটার মতো কোন রাস্তা নেই। ৫শ টাকায় একজন গাইড নিয়ে যেতে প্রশাসনের নির্দেশনা থাকলেও পর্যটকদের থাকার কোন ব্যবস্থা নেই, নেই পাবলিক শৌচাগার।
থানছির রেমাক্রি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মালিরাম ত্রিপুরা বলেন, সরকার একটু নজর দিলে রেমাক্রির বড় পাথর ও নাফাকুম হবে জেলার পর্যটন খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের প্রধান ক্ষেত্র।
স্থানীয়রাও মনে করেন, দ্রুত নাফাকুম পর্যটক যাতায়তের উপযোগী সড়ক নির্মান ও নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তোলা হলে বছরে জেলার সর্বাধিক পর্যটক আগমন হবে এই পর্যটনটিতে।