বান্দরবানের থানচি উপজেলায় নিজের পাকা বাড়ি নির্মাণের জন্য অবৈধভাবে পাহাড় কাটার অভিযোগ উঠেছে, ক্ষোদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মার্মা’র বিরুদ্ধে। গত ২ সপ্তাহ ধরে দিনে রাতে এস্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কাটছেন তিনি, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, থানচি বাসস্টেশন থেকে আমতলী যাবার রাস্তা সংলগ্ন ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় অবস্থিত প্রায় ৫ একর পাহাড়টি কেটে অনেকটাই বর্তমানে সম ভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। দুটি এস্কেভেটর দিয়ে কাটা হচ্ছে পাহাড়। পাহাড়টি থানচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মার্মার নিজস্ব সম্পত্তি। বাড়ি নির্মাণের নামে তিনি ইতোমধ্যে পাহাড়টির অনেকাংশ কেটে ফেলেছেন।
থানচির স্থানীয় অংথুই মার্মা বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি যদি এভাবে পাহাড় কাটেন, তাহলে সাধারণ মানুষ পাহাড় কাটতে উদ্বুদ্ধ হবে, ফলে পরিবেশের অপুরনীয় ক্ষতি হবে।
স্থানীয়রা জানান, থোয়াইহ্লা মং মার্মা বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন, গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হন থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান। এর পর থেকে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পাহাড় কাটার পাশাপাশি উপজেলায় ঠিকাদারী কাজ ভাগিয়ে নিয়ে নিন্মমানের সড়ক নির্মান, অবৈধ পাথর উত্তোলন করে ব্যবসা করছেন তিনি। আর এসব কাজে সহযোগী হিসাবে রেখেছেন নিজের ভাইদের।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এবং বাংলাদেশ ভবন নির্মাণ আইন (১৯৫২) অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোন পাহাড় কাটা যাবেনা। কিন্তু কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে চলছে অবাধে পাহাড় কাটা।
পাহাড় কাটার বিষয়ে থানচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মার্মা বলেন, আমার উপজেলাটি উঁচু নিচু জায়গায় মাথা গুছার ঠাঁই করার জন্য পাহাড় কেটে সমান করতে হয়। পাহাড় কাটার বিষয় অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি জনপ্রতিনিধি হওয়াতে আমার পিছু শত্রু লেগেছে, আমি কোন পাহাড় কেটে মাটি সমান করেনি।
আরো জানা গেছে, একদিকে এস্কেভেটর দিয়ে কাটছেন পাহাড়, অন্যদিকে সেই পাহাড়ের মাটি চড়া দামেও বিক্রি করেও মোটা অঙ্কের অর্থ আয় করছেন এই প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা।
এই ব্যাপারে বান্দরবান পরিবেশ অধিদফতরের পরিদর্শক আবদুস সালাম বলেন, আমি পাহাড় কাটার বিষয়ে শুনেছি। আগামী রবিবার সরেজমিন দেখে ব্যবস্থা নেবো। পাহাড় কাটার জন্য পরিবেশ অধিদফতরের কোনও ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি।