বান্দরবানে পৌর কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েই পাহাড় কেটে বাচ্ছু’র অফিস ও দোকান

NewsDetails_01

বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাজে নিন্মমানের ঠিকাদারীতে বেশ ডাকনাম ছিলো। বিগত বছরগুলোতে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে একের পর এক কাজ হাতিয়ে নিয়ে ঠিকাদারী করে খুব অল্প সময়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। শিক্ষাগত কোন যোগ্যতা না থাকলেও এই অঢেল অর্থেই এবার বান্দরবান পৌর সভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়। আমরা বলছি একজন মো: কামরুল হাসান বাচ্ছু’র কথা। আর কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েই ক্ষমতার প্রভাবে জেলা শহরের ৮নং ওয়ার্ডের হাফেজ ঘোনার প্রধান সড়কের পাশেই রাতারাতি পাহাড় কেটে গড়ে তুলেন নিজের অফিস, দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বান্দরবান শহরের পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের হাফেজ ঘোনা এলাকায় পাহাড় কেটে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে কাউন্সিলর বাচ্চুর একটি অফিস’সহ ৩টি দোকান। অভিযোগ রয়েছে, পৌরসভার অনুমোদন না নিয়েই বাচ্ছু রাতের আধারে পাহাড় কেঁটে তৈরি করে ফেলেন অফিস, দোকানপাট ও বাসা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, কাউন্সিলর হয়ে বাচ্ছু প্রথমে পাহাড় কাটা শুরু করেন, তার দেখা দেখি এলাকায় অনেকে পাহাড় কাটছে, সবাই তার ও তার পরিবারের ভয়ে এলাকায় চুপ রয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, এই অফিস ও দোকাটপাট নির্মান করতে গিয়ে বন ও পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পাহাড় কেটে সাবাড় করছেন তিনি। পরিবেশ রক্ষায় যেখানে জেলা প্রশাসন থেকে পাহাড় না কাটার জন্য মেয়র ও কাউন্সিলর দিয়ে জনমত গঠন করে, সেখানে কাউন্সিলর হয়ে নিজেই পাহাড় কেটে অফিস নির্মান করেছেন পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের হাফেজ ঘোনায়।

NewsDetails_03

পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো: ফারুক বলেন, পাহাড় রক্ষা করা একজন জনপ্রতিনিধির কাজ, সেখানে জনপ্রতিনিধি পাহাড় কাটলে সাধারণ মানুষ পাহাড় কাটতে আরো উৎসহ পাবে, এই ব্যাপারে এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

বান্দরবানের ৮নং ওয়ার্ডের হাফেজ ঘোনায় পাহাড় কেটে অফিস ও দোকান নির্মাণ করেছেন পৌর কাউন্সিলর মো: কামরুল হাসান বাচ্ছু। ছবি-পাহাড়বার্তা

২০০০ সালে সংশোধিত বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ করেছে। আইনে বলা আছে, অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কাটার জরিমানা, প্রথম অপরাধে ২ বছরের কারাদণ্ড, ২ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড। পরবর্তী অপরাধে জরিমানা ১০ বছরের কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

এই বিষয়ে কাউন্সিলর কামরুল ইসলাম বাচ্ছু পাহাড়বার্তা’কে বলেন, আমি কোন পাহাড় কর্তন করিনি। পাহাড় কাটার কথা অস্বীকার করে তিনি আরো বলেন, অফিসের পিছনের থেকে মাটি সরিয়েছি, এই অফিস পৌর মেয়র উদ্বোধন করবেন, তাই এখনো অফিস উদ্বোধন করিনি।

ওনার দেখাদেখি পাশেই পাহাড় কাটছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তবে অনেকে টিন দিয়ে ঘেরা দিয়ে, পশু পালন করছেন।

এই ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবান এর পরিদর্শক মো: আব্দুস ছালাম এর সাথে পাহাড়বার্তা থেকে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে উনার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন