বান্দরবানে চাহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ দিয়ে গ্রাহক সেবা দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। সদরের উপজেলা পর্যায়ে লোডশেডিং আরও বেশি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এদিকে গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের বকেয়া রয়েছে ৪ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে শুধু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কাছেই বকেয়া প্রায় ৯৪ লাখ টাকা। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) বান্দরবান সরবরাহ কেন্দ্র সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পিডিবি বান্দরবান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। জেলায় ৭টি উপজেলা ও দুটি পৌরসভায় বিদ্যুৎ সরবরাহ দুটি কেন্দ্রে বিভক্ত। এর মধ্যে সদর, থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি উপজেলা ও বান্দরবান পৌরসভা পিডিবি বান্দরবান কেন্দ্রের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। অন্যদিকে লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ও লামা পৌরসভা কক্সবাজার জেলার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
পিডিবির জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আমির হোসেন বলেন, বান্দরবান সরবরাহ কেন্দ্রের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে করা হয়। দৈনিক বিদ্যুৎতের চাহিদা ১১ মেগাওয়াট। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। নির্বাহী প্রকৌশলী আরো বলেন, বান্দরবান সরবরাহ কেন্দ্রে বর্তমানে (২৬ জুলাই পর্যন্ত) মোট গ্রাহক ১৮ হাজার ৭ জন। তাঁদের মধ্যে প্রিপেইড মিটার গ্রাহক ২ হাজার ২১৭, অন্যরা পোস্টপেইড মিটারের।
এদিকে গ্রাহকের কাছে পিডিবি বান্দরবান কেন্দ্রের পাওনা মোট ৪ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে শুধু বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) কাছেই বকেয়া রয়েছে ৯৩ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
ডিপিএইচইর সহকারী প্রকৌশলী খোরশেদ আলম প্রধান এ ব্যাপারে বলেন, ডিপিএইচইর বিদ্যুৎ বকেয়া বলা হলেও এটা বান্দরবান পৌর পানি সরবরাহ কেন্দ্রের বকেয়া। ডিপিএইচই পৌর এলাকায় পানি সরবরাহ করে। এ জন্য পানির গ্রাহক পৌরসভাকে বিল দেয়। সে বিল পেলেই বিদ্যুৎতের বিল পরিশোধ করা হয়।
পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আমির হোসেন বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবহার করেও অনেকে বিল পরিশোধ না করায় বকেয়া বাড়ছে। প্রতি মাসে পিডিবি বান্দরবানে বিদ্যুৎতের বিল আসে গড়ে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকার মতো।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান কেন্দ্রের আওতায় ৪১টির মতো সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রত্যেকের কাছেই কম-বেশি বিল বকেয়া আছে। এছাড়া অনেক অফিসে কর্মকর্তা বদল হলে আগের বিলগুলো বকেয়া থেকে যায়। আবার অনেকে সরকারি বাসা ও ডরমিটরিতে থাকলেও বিল না দিয়েই চলে যান। এ জন্যও বিপুল বকেয়া হচ্ছে। এসব ব্যক্তি বদলি হওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজরদারি করলে বিদ্যুতের বিল এভাবে বকেয়া থাকত না।
নির্বাহী প্রকৌশলী দাবি করেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বকেয়া আদায়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ায় পুরোনো অনেক বকেয়া আদায় হয়েছে। লোডশেডিং কমানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতেও বান্দরবানে কম লোডশেডিং হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।